ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন : ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন দ্রৌপদী মুর্মু?
আজ ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ক্ষমতাসীন বিজেপি সমর্থিত জোট এনডিএর পক্ষ থেকে প্রার্থী হয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। অন্যদিকে ভারতের বিরোধী শিবির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে যশবন্ত সিনহাকে। আজ লড়াইয়ের ময়দানে দুজন। কে যাবেন রাইসিনা হিলসে? তা নির্ধারিত হয়ে যাবে আজই। সোমবারের নির্বাচনে ভারতের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ সাংসদ-বিধায়ক নিজেদের ভোট দেবেন। প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই নির্বাচনে জিতবেন দ্রৌপদী মুর্মুই।
আজ সোমবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট চলার কথা। আগামী ২১ জুলাই হবে ভোটগণনা। ২৫ জুলাই শপথ নেবেন দেশটির নতুন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন জিতে তিনি দেশের প্রথম আদিবাসী নারী হিসেবে পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন। অন্যদিকে, গতকাল রোববারও নিজের হয়ে ভোট চেয়েছেন বিরোধী জোটের প্রার্থী যশবন্ত সিনহা। তিনি শেষলগ্নের প্রচারে নেমে দু পাতার টুইট করে লিখেছেন, কেন এই নির্বাচনে ভোট তাঁকেই দেবেন সবাই। যশবন্তের হয়ে সুর চড়িয়েছেন আরজেডি নেতা তথা লালুপুত্র তেজস্বী যাদবও। তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের মানুষ যশবন্ত সিনহাকে কথা বলতে শুনেছেন। কিন্তু কেউ কখনও দ্রৌপদী মুর্মুকে কথা বলতে শোনেননি।
তবে রাজনৈতিক মহলের সমীক্ষা বলছে, রাইসিনা হিলসের লড়াইয়ে সিনহার থেকেও এগিয়েই থাকবেন মুর্মু। আজকের নির্বাচনে কোন ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। ব্যালট পেপারে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখবেন সাংসদ-বিধায়করা।
এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজের ভোট দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভোট দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নিজের ভোট প্রদান করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। বিহারের বিজেপি বিধায়ক স্ট্রেচারে করে নিজের ভোট দিতে এসেছেন। কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও এরই মধ্যে ভোট দিয়েছেন।
ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতোই লম্বা লাইন পড়েছে পশ্চিমবাংলার বিধানসভার বাইরেও। দিনের প্রথম ভাগ থেকেই বিজেপি বিধায়করা লাইন দিয়েছেন বাংলা বিধানসভার বাইরে। নিউটাউনের হোটেল থেকে বাসে করে বিজেপি বিধায়করা সোজা পৌঁছে যান বিধানসভায়। প্রত্যেকের গলায় একই ধরনের উত্তরীয়।
একই লাইনে নিজেদের ভোট দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে যান তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কেরাও। গেরুয়া শিবিরের মতে ৭০ শতাংশ ভোট পাবেন দ্রৌপদী মুর্মু। নির্বাচনের আগেই বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল দাবী করেছেন, তৃণমূলের অনেকেই ভোট দেবেন মুর্মুকে। তবে নির্বাচনের লাইনে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের একাধিক সাংসদ ও বিধায়ক জানিয়েছেন, এই নির্বাচনে তাঁরা দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করছেন না।
২০১৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়ও বিজেপিতে শক্ত প্রার্থী ছিলেন দ্রৌপদী মুর্মু। কিন্তু, শেষমেষ বিহার রাজ্যের তৎকালীন গভর্নর দলিত সম্প্রদায়ের সদস্য রাম নাথ কোভিন্দ এগিয়ে যান এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
ঝাড়খণ্ডের প্রথম নারী গভর্নর দ্রৌপদী মুর্মু কাউন্সিলর হিসেবে রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের যাত্রা করেন। ওড়িশা থেকে দুবার বিজেপির টিকেটে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। বিজেডি ও বিজেপির যৌথ সরকারে মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন দ্রৌপদী মুর্মু। এ ছাড়াও ওড়িশার ময়ুরভঞ্জ জেলা বিজেপির সভাপতি ছিলেন রায়রংপুর এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়ে ওড়িশা রাজ্যসভায়ও তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন।