মাদাগাস্কারে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ২১
ভারত মহাসাগরের দ্বীপদেশ মাদাগাস্কারে ঘূর্ণিঝড় বাতসিরাইয়ের তাণ্ডবে অন্তত ২১ জন নিহত ও ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়িহারা হয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার রাতে দ্বীপটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে আছড়ে পড়ার পর থেকে রোববার রাতে সরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস করে, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে ফেলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়েছে।
বাতসিরাইয়ের কারণে প্রায় পেকে ওঠা ধান, ফল ও শাকসব্জিও নষ্ট হয়েছে। এসব ফসল তোলার ঠিক আগে আগে এমন ক্ষতিতে প্রবল খরার কারণে আগে থেকেই দেশটিতে চলা খাদ্য সঙ্কট আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে বলে জাতিসংঘের খাদ্য ত্রাণ সংস্থা সতর্ক করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর একটি মানানজারিতে বহু ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। কিছু বাড়ির দেয়ালগুলো দাঁড়িয়ে থাকলেও ছাদ উড়ে গেছে। চারদিকে ধ্বংসাবশেষ ও উপরে পড়া, ভেঙে যাওয়া গাছপালা পড়ে আছে।
সোমবার শহরটির বাসিন্দারা তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি থেকে ভেজা পোশাক ও অন্যান্য যা কিছু উদ্ধার করা যায় সেসব সংগ্রহ করছিল।
ঘূর্ণিঝড়ে দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে বহু ভবন ধসে পড়েছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে এবং এর প্রভাবে হওয়া ভারি বৃষ্টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে বলে রোববার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পূর্ব উপকূলের নোসি ভারিকা শহরের প্রায় ৯৫ শতাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
‘যেন এইমাত্র আমাদের এখানে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে,’ মন্তব্য করেছেন তিনি। বন্যার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় বাতসিরাই ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার বাতাগের বেগ ও প্রবল বৃষ্টি নিয়ে মাদাগাস্কারের পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়ে। এর প্রভাবে প্রায় দেড় লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুই সপ্তাহ আগে প্রায় তিন কোটি জনসংখ্যার দ্বীপটিতে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আনার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বাতসিরাই সেই ক্ষয়ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আনার তাণ্ডবে ৫৫ জন নিহত ও এক লাখ ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।