মার্কিন মধ্যস্থতায় সুদানে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি
সুদানে দুই পক্ষই ৭২ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেন। সুদান থেকে এখন কূটনীতিক ও নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। কিন্তু যারা এখনও দেশটিতে আছেন, তাদের নিয়ে প্রতিটি দেশই চিন্তিত। এই ৭২ ঘণ্টায় তাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজে গতি পাবে।
গতকাল সোমবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ব্লিঙ্কেন ঘোষণা করেন, সেনাপ্রধান ও বর্তমান শাসক বুরহান এবং আধা সামরিক বাহিনীর প্রধান দাগালো ৭২ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছেন। এজন্য ৪৮ ঘণ্টা ধরে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়েছে।
গত ৯ দিনে সুদানে তিনবার সংঘর্ষবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
এখন যেহেতু সব দেশ তাদের কূটনীতিক ও নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে, তাই সংঘর্ষবিরতি খুবই জরুরি। ব্লিঙ্কেন জানান, সবার সঙ্গে কথা বলে সুদানে দীর্ঘমেয়াদী সংঘর্ষবিরতির চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র।
আধা সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুদানের সাধারণ মানুষ যাতে নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে পারেন, হাসপাতালে যেতে পারেন এবং বিদেশিরা সুদানের বাইরে চলে যেতে পারেন, সেজন্য সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছেন তারা। এই সংঘর্ষবিরতি তারা পুরোপুরি মেনে চলবেন। তবে, অপর পক্ষ যেন এই সময়ে কোনো সহিংসতা না করে।
সুদানে আগেই নিজেদের দূতাবাস বন্ধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। জাপানও এবার একই পথে হাঁটল। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জানান, ৪৫ জন নাগরিককে সুদান থেকে জাপানে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া ইথিওপিয়া ও ফ্রান্সের সহযোগিতায় ১২ জন জাপানি নাগরিককে সুদানের বাইরে আনা হয়েছে।
এদিকে, সুদানে লড়াইরত দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সুদানে দুই পক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে। গত কয়েকদিনে আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস বলেন, সুদানের এই সংঘর্ষের ফলে গোটা এলাকায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিরাপত্তা পরিষদে তিনি বলেন, অবিলম্বে এই সংঘর্ষ বন্ধ করতে হবে এবং পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোকে গণতন্ত্রের পথে আনতে হবে।
গুতেরেস আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে যতটুকু ক্ষমতা আছে, তা দিয়ে সুদানে সংঘর্ষ থামাতেই হবে। সুদানের মানুষ এখন ভয়ঙ্কর সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’