যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ পিলের অনুমোদন চাইল ফাইজার
ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে কোভিডের চিকিৎসায় তাদের পরীক্ষামূলক বড়ি বা পিলের অনুমোদন চেয়েছে। বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের শীতেই বাড়িতে বসে কোভিডের চিকিৎসায় পিল বাজারজাত করতে চায় ফাইজার। এরই অংশ হিসেবে কোভিড পিল অনুমোদনের আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠিনটি। আর, এমন এক সময়ে ফাইজার অনুমতি চেয়েছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিডের সংক্রমণ আবারও বাড়ছে।
ফাইজারের পিল ব্যবহারে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এরই মধ্যে মার্কের তৈরি কোভিড পিল পর্যালোচনা করছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি ছোট ওষুধ প্রস্তুতকারক আগামী মাসে তাদের নিজ নিজ অ্যান্টিভাইরাল পিলের অনুমোদন চাইবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যালবার্ট বোরলা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা এ সেবা রোগীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের প্রচেষ্টায় যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আমাদের আবেদনের পর্যালোচনার বিষয়ে এফডিএ’র সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’
এফডিএ তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বাইরের বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার জন্য এ মাসের শেষের দিকে মার্কের কোভিড পিল নিয়ে গণপর্যালোচনার আয়োজন করেছে। যদিও সংস্থাটির এ ধরনের সভা আহ্বান করার বাধ্যবাধকতা নেই। এবং এখনও জানা যায়নি যে, ফাইজারের কোভিড পিলও একই ধরনের গণপর্যালোচনার মধ্য দিয়ে যাবে কি না।
সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য দ্রুত পরীক্ষা এবং রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে উপসর্গের তিন দিনের মধ্যে কোভিড পিল গ্রহণ শুরু করতে হবে।
মার্কিন সরকার এরই মধ্যে মার্কের পিল কিনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে জড়িত একজন কর্মকর্তার মতে, মার্কিন সরকার ফাইজারের সঙ্গে তাদের পিলের লাখ লাখ ডোজ কেনার জন্য আলোচনায় রয়েছে।
কোভিড পিল তৈরির অনুমোদন দিতে ফাইজারের চুক্তি
ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ইনকরপোরেশন জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি দলের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার ফলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও পরীক্ষামূলক পিল তৈরি করতে পারবে। এমন পদক্ষেপের ফলে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যার জন্য চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য হবে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ফাইজারের পক্ষ থেকে জানানো হয়—এটি জেনেভা-ভিত্তিক মেডিসিন পেটেন্ট পুলে অ্যান্টিভাইরাল পিলের লাইসেন্স দেবে, যা জেনেরিক ওষুধ কোম্পানিগুলোকে ৯৫টি দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ জনসংখ্যার ব্যবহারের জন্য পিল তৈরি করতে সক্ষম করবে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ফাইজারের পিল কোথাও অনুমোদিত হওয়ার আগেই চুক্তিটি হয়েছে, যা মহামারি দ্রুত শেষ করতে সহায়তা করতে পারে।
মেডিসিন পেটেন্ট পুলের নীতির প্রধান এস্তেবান বুরন বলেছেন, ‘এ চুক্তি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এর ফলে আমরা এমন একটি ওষুধ সরবরাহ করতে সক্ষম হব, যা ৪০০ কোটির বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে।’
এস্তেবান বুরন আরও বলেন, ‘আমরা কোম্পানির স্বার্থ, জেনেরিক উৎপাদকদের জন্য প্রয়োজনীয় স্থায়ীত্ব এবং নিম্ন ও মধ্যআয়ের দেশগুলোতে জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনের মধ্যে একটি খুব সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করি।’
যদিও চুক্তির শর্তাবলীর অধীনে ফাইজার নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে বিক্রয়ের অনুমতি পাবে না এবং চুক্তির আওতায় থাকা সব দেশে বিক্রয়ের ওপর অনুমতি মওকুফ করবে।
এর পরই ফাইজার মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পিলটি অনুমোদন করতে অনুরোধ করেছে।