যুক্তরাষ্ট্রে টায়ার নিকোলসের মৃত্যুর ঘটনার ভিডিও প্রকাশ
এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে টায়ার নিকোলস নামে ২৯ বছরের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। টেনেসি অঙ্গরাজ্যের মেমফিস শহরের হৃদয়বিদারক এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরটির ভিমিও সাইটে প্রকাশিত ওই ভিডিওর ছবি নেওয়া হয়েছে পুলিশের শরীরে থাকা ক্যামেরা ও ড্যাশবোর্ডের ক্যামেরা থেকে। হত্যা, আঘাত, অপহরণ, নিয়ম বহির্ভূত আচরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে ঘটনার সাথে জড়িত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার একদিন পর প্রায় এক ঘণ্টার এই ভিডিও প্রকাশিত হলো।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় কৃষ্ণাঙ্গ ওই পুলিশ কর্মকর্তারা ফেডএক্স কর্মী নিকোলসকে প্রথমে তিন মিনিট ধরে পেটায়। নিকোলসের পরিবার এই ঘটনাকে ১৯৯১ সালে লস এঞ্জেলেসের গাড়িচালক রডনি কিংকে পেটানোর ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, পুলিশ কর্মকর্তারা নিকোলসকে গাড়ির ড্রাইভিং সিট থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে আনে আর এসময় নিকোলস বলছিলেন, ‘আমি কিছুই করিনি, আমি বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম’।
এ সময় তাকে গাড়ির বাইরে এন মাটিতে শুইয়ে দেওয়া হয় আর মুখে ছিটিয়ে দেওয়া হয় পিপার স্প্রে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘মাটিতে শুয়ে থাক।’ আর অন্য একজন বলেন, ‘চেপে ধরো।’
এরপর নিকোলসকে বলতে দেখা যায়, ‘ঠিক আছে, আমি মাটিতে শুয়ে পড়েছি।’
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ‘হাত ভেঙে দেওয়ার আগে সেগুলো শরীরের পিছনে নাও।’
এ সময় নিকোলস বলে ওঠেন, ‘আপনারা একটু বেশি করছেন, আমি কেবল বাড়িতে যেতে চাইছি।’
এর কিছুক্ষণ পর ক্যামেরা ঝাপসা হয়ে আসে এবং নিকোলসকে দৌড়াতে দেখা যায়। এরপর একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে লক্ষ্য করে টেসার (শরীর অবশ করে দেয়ার জন্য বিশেষ বৈদ্যুতিক গুলি) চালায়। এরপর ওই পুলিশ কর্মকর্তা নিকোলসকে মারতে থাকে।
আলাদা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, নিকোলসকে ধরে ফেলার পর ধস্তাধস্তি হয় এবং পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে পেটাতে থাকে। এসময় দুজন নিকোলসকে ধরে রাখে ও আরেকজন তাকে লাথি দিতে থাকে। এ সময় আরেকজন একটি রড দিয়ে নিকোলসকে আঘাত করে। অন্যজন এ সময় নিকোলসকে ঘুষি মারতে থাকে।
এর কয়েক মিনিট পর নিকোলস তার গাড়ির কাছে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনার তিন দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিকোলস মারা যান।
জানুয়ারির ৭ তারিখের ঘটনায় ওই পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় গত শনিবার।