রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার ঠেকাতে বিশ্বকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে : জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন রাশিয়ার কর্মকর্তারা তাদের লোকজনকে সম্ভাব্য পারমাণবিক হামলার বিষয়ে প্রস্তুত করতে শুরু করেছে, তবে তিনি এটাও বলেছেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন না রাশিয়া ওই বোমাগুলো ব্যবহারের বিষয়ে প্রস্তুত রয়েছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে জেলেনস্কি অস্বীকার করেন যে তিনি রাশিয়ার ওপর হামলার আবেদন জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তার মন্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। অবরোধে আরোপের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনাকে অবশ্যই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, আক্রমণ নয়।’
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দেশটির বেশ কিছু ভূখন্ড পুনর্দখল করে নিয়েছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে বাধ্য করেছে তাদের দখলে থাকা অঞ্চল ছেড়ে পিছিয়ে আসতে। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল নিজেদের হিসেবে ঘোষণার বিষয়টিসহ সাম্প্রতিক যুদ্ধের অগ্রগতিকে রাশিয়ার পরাজয় বলে বর্ণনা করেছে কিয়েভ।
ইউক্রেনের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ভূখন্ড নিজেদের করে নেয়ার ‘অবৈধ’ ঘোষণাকে রাশিয়া বাতিল করে দিলেও এই তৎপরতা সাত মাস ধরে চলতে থাকা যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার সিনিয়র কর্মকর্তারা মতামত দিয়েছেন যে এই বাড়তি ভূখন্ড রক্ষায় প্রয়োজনে তারা ছোট আকারের পারমাণবিক বোমাগুলো ব্যবহার করবে। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন মস্কো বোমাগুলো ব্যবহারের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে এমন কোনো প্রমাণ তারা পাননি।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাজধানী কিয়েভে দেয়া সাক্ষাতকারে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তারা (রাশিয়ানরা) তাদের লোকজনকে প্রস্তুত করতে শুরু করেছে আর এটা খুবই বিপদজনক।’
জেলেনস্কি বলেন, ‘তারা এগুলো ব্যবহারের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়, তবে তারা যোগাযোগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তারা নিজেরাও জানে না যে এগুলো ব্যবহার করা হবে কি না। আমার মনে হয় এ বিষয়ে কথা বলাটাও বিপদজনক।’
জেলেনস্কির সাক্ষাতকারটি এমন সময়ে প্রকাশ হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর ঘণ্টাখানের আগে বলেছিলেন যে সমগ্র বিশ্ব স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে ‘কিউবা সঙ্কটে’র পর বর্তমানে একটি ‘রণক্ষেত্রে’র প্রান্তে পৌঁছেছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন এই মুহূর্তে বিশ্বকে পদক্ষেপ নিতে হবে কেননা রাশিয়ার এই হুমকি ‘সমগ্র পৃথিবীর জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ’। আর এই ক্ষেত্রে মস্কো ইউরোপের সবচেয়ে বড় জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল করে এক ধাপ এগিয়ে আছে যেটিকে পুতিন রাশিয়ার সম্পত্তি হিসেবে প্রমাণ করতে তৎপর। জেলেনস্কি জানান প্রায় ৫০০ রাশিয়ান সেনা ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিয়ন্ত্রণ করছে যদিও ইউক্রেনের স্টাফরা এর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘বিশ্ব জরুরিভাবে রাশিয়ান দখলদারিত্ব অবসানে ব্যবস্থা নিতে পারে। বিশ্ব এ ক্ষেত্রে অবরোধ প্যাকেজ আরোপ করে রাশিয়ানদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ত্যাগে বাধ্য করতে পারে।’