রাশিয়া প্রসঙ্গে জাতিসংঘ প্রধানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাগিরি!
যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ওপর গোয়েন্দাগিরি চালানো হয়েছে। দেশটি মনে করে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর তিনি রুশদের প্রতি বেশ ‘কোমল’ ছিলেন। সম্প্রতি পেন্টাগন থেকে ফাঁস হওয়া নথির সূত্র ধরে জানা গেছে এই তথ্য।
ফাঁস হওয়া নথিগুলোয় কৃষ্ণ সাগরে শস্য রপ্তানি চুক্তির ক্ষেত্রে গুতেরেস ও তার ডেপুটির ব্যক্তিগত যোগাযোগের বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। আর এসব কাগজে বলা হয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিব এই ইস্যুতে রাশিয়ার পক্ষ নিতে উদগ্রীব ছিলেন।
সম্প্রতি বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথি অনুসারে অ্যান্তোনিও গুতেরেস তার কাজকর্মে রাশিয়ার রপ্তানির সামর্থ বাড়াতে জোর দিয়েছেন। এর অর্থ দাঁড়ায়, তিনি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষায় বা কারও বিশেষ স্বার্থে কাজ করেছেন।
গত বছরের জুলাই মাসে ইউক্রেন ও রাশিয়া এই রপ্তানি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুসারে দেশ দুটি যুদ্ধ চলা অবস্থাতেও কৃষ্ণ সাগরের ওপর দিয়ে শস্য, সার ও অন্যান্য কৃষি পণ্য রপ্তানিতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিশ্বের খাদ্য সংকট কাটিয়ে উঠতে জাতিসংঘ প্রধান গুতেরেস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান এই চুক্তি সম্পাদনে মধ্যস্ততা করেন।
ফাঁস হওয়া নথিতে অভিযোগ করা হয়, ফেব্রুয়ারিতে যখন আলোচনা চলছিল তখন বৃহত্তর স্বার্থে ইউক্রেনে রাশিয়ার কার্যকলাপের বিষয়ে মস্কোকে দায়ী করতে গুতেরেস যথাযথ ভূমিকা পালন করেননি।
মধ্য ফেব্রুয়ারির আরেকটি নথি বলা হয়, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন যখন অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান, তখন জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস সে বিষয়ে ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছিলেন।
এদিকে, এই প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র বিশ্বসভায় জাতিসংঘ প্রধানের দীর্ঘ মেয়াদের বিষয়টির প্রতি আলোকপাত করে বলেছেন, ‘তার ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ফাঁস হয়ে যাওয়ার এমন ঘটনায় এবং তার পেছনে গোয়েন্দাগিরি করার ঘটনায় আমি মোটেও বিস্মিত হচ্ছি না। তবে, যা আমাদের বিস্মিত করছে, তা হলো—ব্যক্তিগত আলাপের বিকৃতি ও জনসাধারণের কাছে উন্মক্ত করার মাধ্যমে কুকর্ম ও বিশ্বাসহীনতাকে সায় দেওয়া হয়েছে।’