রুশদির হামলাকারীর প্রশংসা ইরানের কয়েকটি পত্রিকায়
বুকারজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলাকারীর প্রশংসা করেছে ইরানের কট্টরপন্থী কয়েকটি পত্রিকা। বিতর্কিত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর রুশদি ১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের কাছ থেকে হত্যার হুমকি পেয়ে আসেন।
গত শুক্রবারের এ হামলার ঘটনার পর ইরান সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউটের মঞ্চে সালমান রুশদির ভাষণ শুরুর আগমুহূর্তে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়।
কট্টরপন্থী ইরানি সংবাদপত্র কায়হান, যার প্রধান সম্পাদককে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খামেনি নিয়োগ দিয়ে থাকেন। পত্রিকাটি সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী ওই ব্যক্তিকে ‘সাহসী ও কর্তব্যপরায়ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন। পত্রিকাটি আরও লিখেছে, ‘যিনি ঈশ্বরের শত্রুর ঘাড় ছিঁড়েছেন তাঁর হাতে চুম্বন করা আবশ্যক।’
‘স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের এক বছর পর ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ১৯৮৯ সালে রুশদিকে হত্যা করতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে একটি টুইটের জন্য খোমেনির টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে। সেই টুইটে বলা হয়েছিল রুশদির বিরুদ্ধে খোমেনির ফতোয়া ছিল ‘খাঁটি এবং অপরিবর্তনীয়’।
ইরানের একটি ধর্মীয় সংস্থা খোমেনির ফতোয়া বাস্তবায়নকারীকে ২৭ লাখ ডলার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়। ২০১২ সালে সেই পুরস্কারের অর্থ বাড়িয়ে করা হয় ৩৩ লাখ ডলার।
আরেক কট্টরপন্থী পত্রিকা ভাতান ইমরোজ শিরোনাম করেছে, ‘সালমান রুশদির ঘাড়ে ছুরি’। দৈনিক দ্য খোরাসান শিরোনাম করেছে, ‘জাহান্নামের পথে শয়তান’।
হামলার ঘটনায় হাদি মাতার নামের এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। ২৪ বছরের এই যুবক যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের ফেয়ারভিউর বাসিন্দা। তিনি চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউটের ওই অনুষ্ঠানের পাস কিনে গিয়েছিলেন। তবে এ হামলার পেছনের উদ্দেশ্য কী তা এখনো জানা যায়নি।
সালমান রুশদির শরীরে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তিনি ভেন্টিলেশনে (কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া) আছেন। বিশ্ব জুড়ে লেখক ও রাজনীতিকেরা এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত।