রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানাল ব্রাজিল, ওয়াশিংটনের নিন্দা
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ব্যাপারে ব্রাজিলের অবস্থান নিয়ে আগে থেকেই সন্তুষ্ট নয় যুক্তরাষ্ট্র। তারপরেও পুতিন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের ব্রাজিল সফর আগুনে আরও ঘি ঢেলে দিয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৭ এপ্রিল) ব্রাজিল সফরে যান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। সেখানে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির অবস্থানের প্রশংসা করেছেন।
লাভরভ বলেন, ‘ইউক্রেন পরিস্থিতির উৎপত্তি কোথায় তা ভালোভাবে বুঝতে পারার জন্য আমরা আমাদের ব্রাজিলীয় বন্ধুদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা এর নিষ্পত্তির উপায় খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করছেন, তার জন্য কৃতজ্ঞ।’
এ সময় লাভরভের পাশে বসা ছিলেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েইরা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলা হয়েছে। ব্রাজিলের অবস্থান যুদ্ধবিরতির পক্ষে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে লুলার সাম্প্রতিক মন্তব্যে অনেকেরই পছন্দ হয়নি। সম্প্রতি তিনি চীন থেকে ফেরার পথে আরব আমিরাত সফরে যান এবং সেখানে বলেন, কিয়েভকেও এই যুদ্ধের দায় নিতে হবে। যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার জারির মার্কিন আহ্বানে ব্রাজিল সায় দেয়নি এবং ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তাও দেয়নি।
এর আগে শনিবার বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধকে উৎসাহিত করা বন্ধ করতে হবে এবং শান্তির বিষয়ে কথা বলা শুরু করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে শান্তির বিষয়ে কথা বলা শুরু করতে হবে।’
এ মাসের শুরুতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট পরামর্শ দিয়েছিলেন, যুদ্ধ শেষ করতে ইউক্রেন ক্রিমিয়া ছেড়ে দিতে পারে।
স্বাভাবিকভাবেই লুলার এই মন্তব্যগুলো ভালো চোখে দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র। লাভরভ ও ভিয়েরার বৈঠকের পর মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘আসল সত্য কী, তা না দেখে রাশিয়া ও চীনের প্রপাগান্ডায় (মিথ্যা প্রচারণায়) সুর মিলিয়েছে ব্রাজিল।’
কিরবি বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিমিয়ার অধিকার ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে দেশটির (ব্রাজিল) সর্বশেষ মন্তব্য একেবারে বিভ্রান্তিকর, বিশেষ করে যে দেশটি সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় (জাতিসংঘে) ভোট দিয়েছে।’
ব্রাজিল অবশ্য মার্কিন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। কিরবির মন্তব্যের বিপরীতে ব্রাজিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েরা বলেন, ‘আমি জানি না কেমন করে তিনি এমন উপসংহারে পৌঁছালেন, তবে এর সঙ্গে আমি একমত নই।’
এদিকে, আরেক সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ বলেন, বৈশ্বিক ইস্যুগুলোতে পশ্চিমারা কর্তৃত্ব বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে।