‘রুশ বিশ্ব’ গড়তে পুতিনের নতুন পররাষ্ট্রনীতি
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমাদের সঙ্গে বৈরি সম্পর্কের মধ্যে একটি ‘রুশ বিশ্বের’ ধারণার ভিত্তিতে নতুন পররাষ্ট্রনীতি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত সোমবার অনুমোদন পাওয়া এই নীতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার উচিত স্লাভিক দেশগুলো, চীন এবং ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য, লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করা।
এছাড়া, ২০০৮ সালে জর্জিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের পর মস্কো থেকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়া আবখাজিয়া ও ওসেটিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করাসহ পূর্ব ইউক্রেনে দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে পুতিনের নতুন নীতিতে। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ছয় মাসেরও বেশি সময় পর পুতিনের ৩১ পৃষ্ঠার এই পররাষ্ট্রনীতি পরিকল্পনা প্রকাশিত হলো, যাকে বলা হচ্ছে ‘মানবহিতৈষী নীতি’। এতে বলা হয়েছে, রুশ বিশ্বের ঐতিহ্য ও আদর্শ এগিয়ে নেওয়া এবং এর সুরক্ষা নিশ্চিত করবে রাশিয়া।
এই রুশ বিশ্বের ধারণা আদতে এক রক্ষণশীল মতাদর্শ। রক্ষণশীল মতাদর্শীরা এই ধারণাকে রুশভাষীদের সমর্থন দিতে অন্য দেশে হস্তক্ষেপ করার যৌক্তিকতা নিরূপণে ব্যবহার করে থাকেন। যেমন- ইউক্রেনের কিছু কিছু স্থানে রুশভাষী মানুষ আছে।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ইস্টার্ন ব্লকের বেশ কিছু দেশ ইউএসএসআর থেকে বেরিয়ে গিয়ে স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু সেসব দেশের প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ জাতিগত রুশ রাশিয়ার বাইরেই থেকে গেছে।
পুতিন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে ভূরাজনৈতিক বিপর্যয় বলে মনে করেন এবং রুশভাষী ওই নাগরিকদের ভাগ্যবিড়ম্বনার শিকার হিসেবেই দেখেন। বাল্টিক থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলো মস্কোর প্রভাব বলয়ের মধ্যে থাকাটাকেও তিনি বৈধ বলে মনে করেন।
রাশিয়া তাদের নতুন পররাষ্ট্রনীতি পরিকল্পনাকে মানবহিতৈষী হিসেবে একটি সদয় ও নমনীয় ক্ষমতা কৌশল হিসেবে তুলে ধরলেও এতে মূলত রুশ রাজনীতি ও ধর্ম ঘিরে সরকারি নীতির ধারণাগুলোই ঠাঁই পেয়েছে।