লকডাউনের কারণে আরও দরপতন হতে পারে চীনা মুদ্রার
সামনের সপ্তাহগুলোতে চীনের মুদ্রা ইউয়ানের অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে—চীনের দুর্বল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সুদের হার আরও কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এশিয়া নিক্কেই’র প্রতিবেদনের বরাতে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সাংহাইয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭৪, যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। কোভিড মোকাবিলায় লকডাউনের কারণে চীনের অর্থনীতি মন্থর হওয়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার বাড়তে শুরু করায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউয়ানের দর কমতে শুরু করেছে। চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মুদ্রাটির দর পাঁচ শতাংশ কমেছে।
এ ছাড়া এশিয়া নিক্কেই’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক—পিপলস ব্যাংক অব চায়না, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিন সেশনের জন্য ইউয়ানের রেফারেন্স রেটকে দুর্বল দিকে নির্ধারণ করায়, ধারণা করা হচ্ছে—এটি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে মুদ্রার অবমূল্যায়ন বহন করবে।
এর আগে চলতি বছরের ৫ মার্চ চীনা কর্তৃপক্ষ একটি স্থিতিশীল ইউয়ান বিনিময় হার বজায় রাখতে, আর্থিক ঝুঁকি প্রতিরোধে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করার লক্ষ্যে একটি বিচক্ষণ মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের অভিপ্রায় ঘোষণা করেছিল।
দেশটির অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু সাংহাইয়ে মার্চের শেষের দিকে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে যে কঠোর নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে, তার প্রভাবে চীনের রপ্তানি বৃদ্ধি এপ্রিল মাসে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গেছে। সেইসঙ্গে অন্যান্য শহরগুলোর অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
এএনআই বলছে—চীনের সামগ্রিক বাণিজ্য এপ্রিলে ২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে মার্চ মাসে এ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, দেশটির রপ্তানি বৃদ্ধি মার্চ মাসে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে এপ্রিলে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রতিবেদন বলছে—চীনের এ সামগ্রিক পরিস্থিতির ফলে ইউয়ানের অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে। যদি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ইউয়ানের দর বৃদ্ধির বিপরীত দিকে যায়, তাহলে এটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তখন তারা চীনের সরকারি বন্ড ও অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করতে বাধ্য হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে—পিবিওসি ইউয়ানের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।