লোকসভা নির্বাচনে একা লড়বে তৃণমূল : মমতা
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস কোনো জোটের হয়ে নয়, একাই লড়বে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একটা উপনির্বাচনের ফল বড় প্রভাব ফেলল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। সাগরদিধির ফলাফল প্রকাশের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২০২৪ এর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস একাই লড়বে। কোনো দলের সঙ্গে জোটে যাবে না।’
অন্যদিকে, সাগরদিঘিতে জয়ের পর উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘জোটকে স্থায়ী করতে হবে।’ তবে, তৃণমূলকে ঠেকাতে জোটের পক্ষে সিপিএমও।
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে উপনির্বাচনে হারের পর মমতা বলেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে মানুষের জোট হবে। আমরা কারও সঙ্গে যাব না। একা লড়ব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে।’
মমতার দাবি, ‘সিপিএম ও কংগ্রেস রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে সেটিং করে নিয়েছে। ওদের মধ্যে জোট আছে। তাহলে সিপিএম ও কংগ্রেস কী করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে? কী করে কংগ্রেস ও সিপিএম নিজেদের বিজেপিবিরোধী বলে দাবি করে?’
কংগ্রেস ও সিপিএম দুই দলেরই অভিযোগ, তৃণমূল হলো বিজেপির বি টিম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদতে বিজেপিকেই সাহায্য করেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই অভিযোগ নিয়ে সোচ্চার। মমতাও এর আগে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির আঁতাতের কথা বলেছেন। এই তিন দলকে তিনি ‘জগাই, মাধাই, গদাই’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
মমতার অভিযোগ, ‘সাগরদিঘিতে সিপিএম ও কংগ্রেস সাম্প্রদায়িক তাস খেলেছে। বিজেপি এই তাস খোলাখুলি খেলে। কংগ্রেস ও বামেরা খেলেছে গোপনে। আমরা সিপিএম ও কংগ্রেসের কথা শুনব না। ওরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।’
কিছুদিন আগেও দিল্লিতে এসে বিজেপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজন প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছিলেন মমতা। তিনি বিরোধী দলগুলোকে একজোট করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই উদ্যোগ খুব একটা সফল হয়নি। এবার তিনি ‘একলা চলো’ ডাক দিলেন।
কংগ্রেস ও সিপিএমের বক্তব্য
কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘ত্রিপুরায় এই জোট ক্ষমতায় আসতে পারেনি ঠিকই, কিন্তু সাগরদিঘির মানুষ জোটকে মেনে নিয়েছেন। গোটা রাজ্যে জোটকে আরও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। তাহলেই পঞ্চায়েত ভোটে সাফল্য আসবে।’
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘তৃণমূলকে যারা সমর্থন করেছিলেন, তারা টের পেয়েছেন—রাজ্যের সর্বনাশ হয়েছে। প্রত্যেক দিন নিয়োগ-দুর্নীতির খবর আসে। নগদে, সোনায়, সম্পত্তিতে কোটি কোটি টাকার কারবার ক্রমশ কালীঘাটের দিকে এগোচ্ছে।’ তার দাবি, মানুষ বুঝেছেন, বিভাজন তৈরি করে তাদের ঠকানো হয়েছে।
কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের জোট নিয়ে প্রথম থেকে সোচ্চার ছিলেন আব্দুল মান্নান। সাগরদিঘির ফলের পর তিনি বলেন, এই জোট নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। বালিগঞ্জে জোট হলে সেখানেও তারা জিততেন বলে মনে করছেন মান্নান।