শেয়ারবাজার থেকে ২৫৭ কোটি ডলার তুলতে চায় আদানি গ্রুপ
শেয়ারবাজারে সাতটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপের। এর মধ্যে দুটি কোম্পানির শেয়ার নতুন করে বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবারের (১৩ মে) এই ঘোষণার মাধ্যমে বাজার থেকে ২৫৭ কোটি মার্কিন ডলার তুলতে চায় ওই দুই কোম্পানি। এদিন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
গত ২৪ জানুয়ারি আদানি শিল্পগোষ্ঠী নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউইয়র্ক ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি অভিযোগ করে, জালিয়াতির মাধ্যমে গৌতম আদানি তার মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বৃদ্ধি করেছেন। তোলা হয় কর ফাঁকির অভিযোগও। তবে, বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে আদানির শিল্পগোষ্ঠী। এরপর থেকেই আদানির শেয়ারের দাম কমছে। এমনকি, বিনিয়োগকারীদের আস্থাও হারিয়েছে ভারতের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়িক গ্রুপটি।
আদানি ট্রান্সমিশন এডিএআই.এনএস বলছে, শেয়ারবাজারে নতুন করে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে ১০০ কোটি ডলার বা আট হাজার ৫০০ কোটি রুপি (ভারতীয় মুদ্রা) সংগ্রহ করতে একটি পরিকল্পনা বোর্ড থেকে পাস হয়েছে। অন্যদিকে, একই কাজ করতে যাচ্ছে আদানি এন্টারপ্রাইজের এডিইল.এনএস। তারা বলছে, ১৫৩ কোটি ডলার বা ১২ হাজার ৫০০ কোটি রুপি বাজার থেকে সংগ্রহ করার অনুমতি দিয়েছে বোর্ড।
রয়টার্স জানিয়েছে, বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য বেশ কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে ধনকুবের গৌতম আদানি ও তার শিল্পগোষ্ঠীর বোর্ডকে। হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনে পর ২৫০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েও সেখান থেকে ফিরে গিয়েছিল আদানির শিল্পগোষ্ঠী।
হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনকে এখনও অস্বীকার করে আসছে গৌতম আদানি। তবে, বিষয়টি এখনও তদন্ত করছে ভারতের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া’ (সেবি)।
আদানির শিল্পগোষ্ঠীর শেয়ার বিক্রি নিয়ে দিল্লিভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বুলেরো ক্যাপিটালের পরিচালক ভারুন খান্ডেলাল বলেন, ‘আদানি শিল্পগোষ্ঠী তহবিল আটকে দেওয়া হয়েছে, নতুন ঘোষণায় এমনটিই বোঝা যাচ্ছে। এটি শিল্পগোষ্ঠীটির শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।’
এদিকে, আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড এডিএনএ, এনএসও নতুন করে শেয়ার বিক্রির কথা ভাবছে। আগামী ২৪ তারিখে কোম্পানিটির বোর্ড মিটিং হবে। এরপরেই কোম্পানিটি থেকে এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
সম্প্রতি মাসগুলোতে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সাত কোম্পানির শেয়ারের দাম কিছুটা বেড়েছে। আর গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগকারী ফার্ম জিকিউজি পার্টনারস আদানি গ্রুপে ১৮৭ কোটি ডলার বিনিয়োগের পর শেয়ারের দাম আগের তুলনায় কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে, হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনের আগে শেয়ারের দাম যে উচ্চতায় পৌঁছেছিল সেখানে যেতে পারেনি তারা।