শ্রীলঙ্কার মতো চরম বিপৎসীমায় ১২টি দেশ
শ্রীলঙ্কার মতো খাদের কিনারায় পাকিস্তান, আর্জেন্টিনাসহ বিশ্বের ১২ দেশ। এসব দেশে চোখ রাঙাচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মূল্যস্ফীতি ও বিশৃঙ্খলা। ফলে দেশগুলোর সরকার ও নাগরিকেরা পড়ে গেছেন চরম দুর্ভাবনায়। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
শ্রীলঙ্কার মতো ঋণগ্রস্ত, দেউলিয়া বা অর্থনৈতিক দুর্দশাগ্রস্ত হতে পারে বিশ্বের আরও অন্তত ১২টি দেশের। রয়টার্স বলছে—শ্রীলঙ্কা ছাড়াও এরই মধ্যে লেবানন, রাশিয়া, সুরিনাম ও জিম্বাবুয়ে ঋণখেলাপি দেশে পরিণত হয়েছে।
এ ছাড়া পাকিস্তান, বেলারুশসহ আরও দশটির বেশি দেশ অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে। এসব দেশের মাথার ওপর চেপে আছে বড় ধরনের ঋণের বোঝা, যার পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
সবচেয়ে বেশি ঋণের বোঝা আর্জেন্টিনার। তাদের ১৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। দেশটির মুদ্রা পেসোর দাম কমেছে প্রায় ৫০ ভাগ।
আফ্রিকার দেশ মিশর এবং দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডরের অবস্থাও বেসামাল। দেশ দুটিকে চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে মিশরের মুদ্রার দাম কমেছে ১৫ ভাগ।
এ ছাড়া পাকিস্তানের মুদ্রা রুপিরও রেকর্ড মূল্যপতন হয়েছে। দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ নেমে গেছে এক হাজার কোটি ডলারের নিচে। আগামী পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত তারা আমদানি চালিয়ে যেতে পারবে।
এ ছাড়া পাকিস্তানের রাজস্ব আদায়ের ৪০ ভাগই চলে যাচ্ছে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে। ফলে শাহবাজ শরিফ সরকারকে বড় ধরনের রপ্তানি ব্যয় কমাতে হবে।
এদিকে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকেও দুই হাজার কোটি ডলার ঋণ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ছাড়া আগামী দুমাসের মধ্যে দেশটিকে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির ভয়াবহ চিত্রের দেশের মধ্যে আরও রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এল সালভাদর, আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া, ঘানা, কেনিয়া, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, তিউনিশিয়া ও জাম্বিয়া।
মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানও রয়েছে অর্থনৈতিক দুর্দশা।
আর, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়াঘনিষ্ঠ বেলারুশও পিষ্ট হচ্ছে বিদেশি ঋণের বোঝায়।
কোনো দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে গেলে ঠিক কী হয়, তা শ্রীলঙ্কাকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। খাবার নেই, তেল নেই—ভেঙে পড়া রাজনৈতিক কাঠামো পুরো দুনিয়ার সামনে শ্রীলঙ্কাকে একটি উদাহরণ হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছে।