সীমান্তে সংঘর্ষ : আসামের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা মিজোরাম পুলিশের
ভারতের আসাম-মিজোরাম সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা করেছে মিজোরাম পুলিশ। হিমান্ত বিশ্বশর্মার পাশাপাশি আসামের চার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা, দুই আমলা এবং আসাম পুলিশের ২০০ সদস্যের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা, অস্ত্র আইন এবং মিজোরাম কনটেইনমেন্ট অ্যান্ড প্রিভেনশন অব কোভিড-১৯ আইন ২০২০-এর ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ২৬ জুলাই আসাম-মিজোরাম সীমান্ত সংঘর্ষে ছয় পুলিশ সদস্য এবং একজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছিল বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মিজোরাম পুলিশ অভিযোগপত্রে জানিয়েছে—আসাম পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র দল জোর করে তাদের পুলিশ ক্যাম্প দখল করতে এসেছিল। মিজোরাম পুলিশ সংখ্যায় কম থাকায় ওই সশস্ত্র দলের সঙ্গে টক্কর দিতে পারেনি। খবর পেয়ে কোলাসিবের পুলিশ সুপার দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং আসাম পুলিশের সঙ্গে এ নিয়ে বোঝাপড়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু, তাতে কোনো লাভ হয়নি। বরং আসাম পুলিশের পক্ষ থেকে কোলাসিবের পুলিশ সুপারকে বলা হয়, ওই এলাকা আসামের মধ্যে। আসামের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ তারা পুলিশ ক্যাম্প করতে চায়।
এদিকে, সীমানায় সংঘর্ষের ঘটনায় আসামকে দায়ী করেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। আসাম পুলিশই প্রথম গুলি চালায় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অন্যদিকে, হিমান্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন—তাঁরা শান্তি চান।
ভারতের দুই রাজ্যের সীমানায় সংঘর্ষের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বশর্মা দাবি করেছেন—মিজোরামের নাগরিকেরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল। সেজন্য আসামবাসীকে প্রতিবেশী রাজ্যে ভ্রমণ এড়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হিমান্ত বিশ্বশর্মা বলেন—ভ্রমণে বাধা নেই, কিন্তু যেভাবে সেখানকার মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে, তা চিন্তার।
তবে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বশর্মা এবং মিজোরামের জোরামথাঙ্গা দুজনেই জানিয়েছেন—তাঁরা চান না, এই পরিস্থিতি বজায় থাকুক। তবে, গুলি চালানোর ব্যাপারে মিজোরামের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে আসাম।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বিবাদের মধ্যেই আসাম ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন অমিত শাহ। তাঁদের সমস্যার সমাধান করতে বলেছিলেন। এরপর গত সোমবার আসাম ও মিজোরামের সীমানায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সীমানায় গোলাগুলি, এমনকি সরকারি গাড়ি লক্ষ করে হামলার ঘটনাও ঘটে।