কিউবা আর ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ নয়
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তালিকা থেকে দ্বীপরাষ্ট্র কিউবাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ওবামার নেওয়া এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে কংগ্রেস। গত ১৪ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তালিকা থেকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিউবাকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
দ্বীপরাষ্ট্র কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে বিপ্লব সংগঠিত হওয়ার পর বিগত শতকের ষাটের দশকের শুরুতে কিউবাকে দেশটিকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করে বিভিন্ন অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না।
প্রেসিডেন্ট ওবামার এ সুপারিশ করার পর নিয়ম অনুযায়ী তা আলোচনার জন্য মার্কিন কংগ্রেস ৪৫ দিন সময় নেয়। গত ১৪ এপ্রিল থেকে এ সময় শুরু হয়। পররাষ্ট্র দপ্তরের বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন এফ কেরি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সন্ত্রাসের তালিকা থেকে কিউবার নাম তুলে নেন।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেফ রাথকে বলেন, ‘বিষয়টি থেকে নাম বাদ দেওয়ার যোগ্যতা পূরণ করেছে কিউবা।’ তিনি আরো বলেন, ‘কিউবার নীতি ও কর্মপন্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতভেদ থাকলেও কালো তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব বিষয় আমলে আনা হয়নি।’
গত বছর ডিসেম্বরে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের নিদর্শন হিসেবে দূতাবাস পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন ওবামা। এ বছরের ১২ এপ্রিল পানামার রাজধানী পানামা সিটিতে বারাক ওবামা ও কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর মধ্যে বৈঠক হয়। এটি ছিল দীর্ঘ ৫০ বছর পর প্রথম দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে কোনো বৈঠক। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র-কিউবার মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল ১৯৫৮ সালে।
ওই সময় কিউবার ক্ষমতায় থাকা ফুলজেনসিও বাতিস্তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট আইজেনআওয়ারের বৈঠক হয়। পরে স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক শীতল হয়ে ওঠে। এমনকি কিউবার সরকার উৎখাতের চেষ্টাও করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত বছরের শেষদিকে বন্দিবিনিময় দিয়ে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের বরফে ভাঙন শুরু হয়।