ভেতরে পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ, বাইরে বোমা হামলা
পাকিস্তানের লাহোর শহরে পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে স্টেডিয়ামের পাশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় এক পুলিশসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ছয়জন।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের পাশে হামলা হয়। ওই সময় পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে ওয়ানডে ম্যাচ চলছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে ডন আরো জানায়, শুক্রবার দুপুরে লাহোরের ফিরোজপুর রোডে অবস্থিত গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে হামলার চেষ্টা চালায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী। কিন্তু ভেতরে ঢোকার আগেই এক পুলিশ কর্মকর্তা ওই হামলাকারীকে ধরে ফেলেন।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পারভেজ রশিদ জিও টিভিকে জানিয়েছেন, নিজের জীবন দিয়ে স্টেডিয়ামে আত্মঘাতী হামলার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। তবে তিনি ওই নিহত পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় উল্লেখ করেননি।
আজ শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে পাঞ্জাব পুলিশ প্রধান ইফতিখার খার জানান, বোমা বিস্ফোরণে সাব ইন্সপেক্টর আবদুল মজিদ এবং রিজওয়ান নামের এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার সূত্রে জিও টিভি আরো জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে তথ্য মন্ত্রণালয় প্রথম দিকে এ হামলার খবর প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাই ওই হামলার পর দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রচারিত খবরে বলা হয়েছিল, শুক্রবার সন্ধ্যায় স্টেডিয়ামের পাশের একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ ঘটে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই হামলার কোনো প্রভাব পড়েনি স্টেডিয়ামে। হামলার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। লাহোরে দ্বিতীয় ওয়ানডতে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ছয় উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান।
এর আগে ২০০৯ সালের ৩ মার্চ এই লাহোরেই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের কাছাকাছি এলাকায় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের বহনকারী বাসে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। ওই হামলায় ছয় পুলিশ ও দুই বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান। শ্রীলঙ্কার জাতীয় ক্রিকেট দলের ছয়জন সদস্যও ওই হামলায় আহত হন।
ওই ঘটনার পর ক্রিকেটসহ পুরো ক্রিয়াবিশ্বই বয়কট করেছিল পাকিস্তানকে। বাধ্য হয়ে দেশটির সবচাইতে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের হোম গ্রাউন্ড বানাতে হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইকে।
চলতি পাকিস্তান- জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়েই দীর্ঘ ছয় বছরের নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফিরেছে পাকিস্তান ক্রিকেট। কঠোর নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জিম্বাবুয়ে দলকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নিয়ে এসেছে দেশে। ম্যাচ চলাকালে নিরাপত্তার দায়িত্বে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ছিল ৪ হাজার পুলিশ। টিম হোটেল থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত রাস্তায় নিরাপত্তার জন্য ছিল ২০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই ঘটে গেল আত্মঘাতী হামলার এই ঘটনা।