বাংলাদেশি তরুণী ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি
এবার বাংলাদেশি-আমেরিকান তরুণী মুনীরা আহমেদ হয়ে উঠেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদী মুখ। গত শুক্রবার শপথ গ্রহণের পর দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লাখো মানুষ মুনীরার ছবি সংবলিত পোস্টার নিয়ে আন্দোলন করেছেন।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান জানিয়েছ,কুইন্সের ৩২ বছর বয়সী মুনীরা একজন ফ্রিল্যান্সার। মুনীরা আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের জ্যামাইকাতে বেড়ে উঠেছেন। ১৯৭০ সালের দিকে তাঁর বাবা-মা বাংলাদেশে ছেড়ে সেখানে গিয়ে স্থায়ী হন। মুনীরা সেখানে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা মিশিগানে স্থায়ী হয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা পোস্টারে দেখা যাচ্ছে,বাংলাদেশি আমেরিকান ওই তরুণী আমেরিকার পতাকা দিয়ে বানানো হিজাব পড়ে আছে। এ ছাড়াও তার পাশে একজন লাতিন তরুণী এবং কৃষ্ণাঙ্গ এক বালকের পোট্রেট রয়েছে। সেগুলোর প্রত্যেকটির নিচে লেখা রয়েছে-উই দ্য পিপল।
আর এই পোর্টেটগুলো করেছেন শিপার্ড ফেইরে নামের একজন শিল্পী। যিনি ২০০৮ সালে বারাক ওমাবার পোর্টেট করেছিলেন।
মুনীরা আহমেদ শনিবার ট্রাম্পবিরোধীদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন,‘এটা বলছে, আমিও তোমার মতোই একজন আমেরিকান। আহমেদ বলেন, ‘আমি আমেরিকান, আমি মুসলিম এবং আমি এ দুটোতেই গর্ববোধ করি।’
শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর শনিবার দেশটির বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধীরা বিক্ষোভে নামে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ওই পোস্টার দেখা যায়। এর আগে ফেইরের ওই পোর্ট্রেট নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রের পুরো পাতাজুড়ে ছাপা হয়েছে।
আহমেদ বলেন,‘এটা একটা সম্মান, কারণ ছবিটি কী উপস্থাপন করছে। এটা কোনো কিছুর বিরুদ্ধে নয়। এটা একটা অন্তর্ভুক্তি মাত্র। এটা বলছে আমিও তোমার মতো একজন আমেরিকান।’
ওয়াশিংটনে বিক্ষোভের সময় আহমেদ বলেন, কংগ্রেসের এক নারী আমার দিকে আসে। তিনি বলেন এই মাত্র ছবিতে যাকে তিনি দেখলেন,আমিই সেই নারী। আমি আশ্চর্য হয়েছিলাম। কারণ আমি মানুষের সামনে এমন ভান করছিলাম যেন, এটি অন্য কেউ। যিনি হিজাব পরে আছেন। সত্যিই আমি না।’
মুনীরা আরো বলেন,‘একদল বালিকা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল এবং আমি তাদের বলেছিলাম আমি কখনোই এটা করিনি।’
মুনীরার যে ছবি থেকে প্রোট্রেট করা হয়েছে। সেটি তুলেছিলেন তাঁর বন্ধু রিদওয়ান আদহামি। তিনি এবং মুনীরা নিউইয়র্কে বেড়াতে গিয়ে ৯/১১ এর ঘটনাস্থলের সামনে দাঁড়িয়ে ছবিটি তুলেছিলেন।
ফেইরে বলেন, আমেরিকার পতাকার ওই হিজাব খুবই শক্তিশালী। কারণ এটা মানুষকে মনে করিয়ে দেবে যে ধর্মের স্বাধীনতা আমেরিকার ভিত্তিগত নীতি। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের আমেরিকায় স্বাগত জানানোর ইতিহাসও রয়েছে।