সাতদিনে যা করলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম সপ্তাহ পার করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে প্রার্থী থাকাকালীন বক্তব্যে নানা বিতর্কের জন্ম দেন তিনি। নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সাতদিন একাধিক নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। এগুলো নিয়েও বইছে বিতর্কের ঝড়।
সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্ট প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম সপ্তাহের শাসক ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করেছে। চলতি মাসের ২০ জানুয়ারি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
২০ জানুয়ারি
অভিষেকের দিন ভাষণ দিলেন। বললেন, ‘বাণিজ্য, কর, অভিবাসন নিয়ে যেসব সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে তাই হবে মার্কিন শ্রমিক এবং মার্কিন পরিবারের পক্ষে।
অভিষেক অনুষ্ঠানের জনসমাগম নিয়ে গণমাধ্যমের করা প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন। ঘোষণা দিলেন তাঁর সমালোচকরা তাঁর ‘শক্র’। ওই দিনই ট্রাম্পের নির্দেশে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইট থেকে কিছু লেখা মুছে ফেলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারের ইতিহাস লেখা পাতাটি ট্রাম্প সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। সেখানে নতুন নির্দেশনা যোগ করা হয়। নতুন করে লেখা হয়, অপরাধ ও সহিংসতা দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতা বাড়াবে ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে আরো লেখা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে বদ্ধ পরিকর।
প্রথম সপ্তাহেই প্রথম নির্বাহী আদেশে সই করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওই আদেশেই বাতিল হয়ে যায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার নেওয়া স্বাস্থ্য পরিকল্পনা, যা ওবামা কেয়ার নামে পরিচিত।
২১ জানুয়ারি
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কে জানান, ইরাকের তেল দখলে নেওয়ার আরেকটা সুযোগ এসেছে। দ্বিতীয় দিনই ট্রাম্প সরকার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। প্রেস সেক্রেটারি সিন স্পাইসারের মাধ্যমে নিজের কথা জানান ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এ সরকারের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে স্পাইসার বলেন, ‘আমরা প্রেসের জবাবদিহিতার কথা বলতে যাচ্ছি। মার্কিনিরা আরো ভালো কিছু চায়।’
২২ জানুয়ারি
কট্টর ডানপন্থি স্টিভ ব্যানন ও নিজের জামাতা জারেড কুশনারসহ ৩০ জনকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ঘোষণা দেন, নিজের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করবেন না।
২৩ জানুয়ারি
নিজের অভিষেকের দিনকে জাতীয় দেশপ্রেমিক ভক্তি দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন ট্রাম্প। প্রশান্ত মহাসাগরীয় ব্যবসাসংক্রান্ত যাবতীয় চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে আসেন ট্রাম্প। একে তিনি বলেন, ‘মার্কিন শ্রমিকদের জন্য দারুন কিছু।’
২৪ জানুয়ারি
কৃষি ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এক নির্বাহী আদেশে ডকোটা অ্যাকসেস এবং কিইস্টোন পাইপলাইনের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। ওই পাইপলাইনের কাজটি বিতর্কিত। ওই পাইপলাইন নির্মাণের বিরোধীতা করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবাদীরা। সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামাও ওই পাইপলাইন নির্মাণের কাজ বন্ধ রেখেছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই সাত দেশের নাগরিকদের ভিসা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন।
সাতটি দেশ হচ্ছে সিরিয়া, ইরান, ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, সুদান ও সোমালিয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে ওই সাতটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘বিপজ্জনক’, ‘সন্ত্রাসপ্রবণ’ এবং ‘দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’।
২৫ জানুয়ারি
গুরুত্বপূর্ন নির্বাহী আদেশে সই দেন। ওই আদেশে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকা সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণের ঘোষণা দেন। অভিবাসীদের ব্যাপারে নিজের নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানান। নির্দেশ দেন অভিবাসীদের অপরাধের তালিকা তৈরি করার। যা প্রতি সপ্তাহে তাঁর টেবিলে রাখতে হবে।
২৬ জানুয়ারি
মেক্সিকো দেওয়াল নির্মাণের জন্য মেক্সিকানদের কাছ থেকেই অর্থ নিতে চান ট্রাম্প। ওই দিন ঘোষণা দেন আমদানির ক্ষেত্রে মেক্সিকান পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ কর আরোপের নির্দেশ দেন তিনি।
২৭ জানুয়ারি
যেসব রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তাঁদের তিনজনের নাম প্রকাশ করেন ট্রাম্প। প্রশাসন থেকে জানানো হয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেই তিনি ফোনে কথা বলবেন। অন্যদিকে জার্মান চ্যানসেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন বলে তিনি জানান।
আর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সাথে মুখোমুখি বৈঠক করবেন। যা গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়।