আদালতের রায়ের পর নওয়াজের পদত্যাগ
পানামা নথি কেলেঙ্কারির মামলায় সুপ্রিম কোর্ট অযোগ্য ঘোষণার পর পদত্যাগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
শুক্রবার দুপুরে পদত্যাগের ঘোষণা দেন মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএল-এন) সরকারের প্রধান।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, আদালতের রায়ের বিষয়ে আপত্তি থাকা সত্ত্বেও পদত্যাগ করেছেন নওয়াজ শরিফ।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের অযোগ্য ঘোষণার বিষয়টি জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নওয়াজ।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, শরিফ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু এর পরও বিচারব্যবস্থা ও আইনের শাসনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করে রায় দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে সর্বোচ্চ আদালত পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি ব্যুরোকে (এনএবি) ছয় সপ্তাহের মধ্যে মামলার আসামি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তাঁর সন্তানদের বিরুদ্ধে একটি রেফারেন্স দায়েরের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী ইশাক দার এবং আইনপ্রণেতা ও প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের জামাতা অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন সফদার আওয়ানের বিরুদ্ধেও রেফারেন্স দায়েরের নির্দেশ দেন আদালত।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে পানামা নথি-সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে। সে বেঞ্চই শুক্রবার নওয়াজকে অযোগ্য ঘোষণার রায় দিল।
ওই বেঞ্চের পাঁচ সদস্য হলেন—বিচারপতি আসিফ সাঈদ খোসা, বিচারপতি এজাজ আফজাল খান, বিচারপতি গুলজার আহমেদ, বিচারপতি শেখ আজমত সাঈদ ও বিচারপতি ইজাজুল আহসান। রায় পড়ে শোনান বিচারপতি এজাজ আফজাল।
এর আগে পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রীই মেয়াদের নির্ধারিত পাঁচ বছর পূর্ণ করতে পারেননি। মুসলিম লীগ সরকারের প্রধান নওয়াজের ভাগ্যেও তা-ই জুটল।
সুপ্রিম কোর্টের এক নম্বর কক্ষে রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার আবেদনকারী আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রধান শেখ রাশিদ ও জামায়াত-ই-ইসলামীর প্রধান শেখ সিরাজুল হক।
আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণাকালে সুপ্রিম কোর্ট ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় ইসলামাবাদ পুলিশ ও পাঞ্জাব রেঞ্জার্সের প্রায় তিন হাজার সদস্যকে।