ওবামা যেখানে যান, সবকিছু থেমে যায়
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যস্ততম নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটন অঞ্চল যেন হঠাৎ থমকে গেল। ব্যস্ত হয়ে গন্তব্যে ছোটা ব্যক্তিরা দাঁড়িয়ে পড়লেন। কী ঘটেছে দেখার চেষ্টায় থেমে থাকা বাসসহ অনেক গণপরিবহন যাত্রীরা। উৎসুক জনতা সবাই তাকিয়ে আছেন পার্কের দিকে। পার্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ১৪ বছর বয়স্ক মেয়ে সাশা। ওবামা অঙুল তুলে মেয়েকে দেখালেন ম্যানহাটন।
গত শুক্রবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে এই চিত্র দেখা যায়। বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কড়া নিরাপত্তার মধ্যে থাকতে হয়। কড় নিরাপত্তার কারণে ওবামা যেখানে যান সেখানকার জনজীবন যেন থেমে যায়। নিউইয়র্ক সফরও এর ব্যতিক্রম নয়।
শুক্রবার প্রেসিডেন্টের নিজস্ব পরিবহন এয়ারফোর্স ওয়ান নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে ওবামা ও তাঁর মেয়ে সাশাকে নিয়ে পৌঁছে। এর কয়েক মিনিট পরই হেলিকপ্টারযোগে ম্যানহাটনে পৌঁছান তাঁরা। ওবামা ও তাঁর মেয়ের আগমনে ম্যানহাটনের প্রায় সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্টকে নিয়ে গাড়িবহর শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকায় যায়। এ সময় প্রেসিডেন্টের গাড়িবহর অন্তত ২৬টি ট্রাফিকের লালবাতি অমান্য করে। তবে জনজীবন থেমে থাকলেও সাধারণ মানুষ হাত নেড়ে প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানান।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওবামাকে কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে চলাফেরা করতে হয়। তাঁর নিরাপত্তায় থাকে হেলিকপ্টার, বিমান, ভারী যানবাহন আর অত্যাধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধু কড়াই নয় বেশ ব্যয়বহুলও। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিমান বোয়িং ৭৪৭ জেট প্রতি ঘণ্টায় চলতে ব্যয় হয় এক লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। আর মধ্য আকাশেও এই বিমানে জ্বালানি নেওয়া সম্ভব। ‘বিস্ট’ নামে পরিচিত প্রেসিডেন্টের ব্যয়বহুল লিমুজিন গাড়িটি গুলি ও রাসায়নিক হামলা থেকে রক্ষা করতে পারে। এভাবে অত্যন্ত কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়ান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই দিন রাত নিরাপত্তায় হাঁপিয়ে ওঠেন ওবামা। এই কারণেই তিনি বাবার জন্মভূমি কেনিয়ায় যেতে চান কড়া নিরাপত্তা ছাড়াই। ওবামার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নয় বরং একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে কেনিয়া সফর হবে তাঁর জন্য অর্থবহ। কারণ এর ফলে হোটেল ও কনফারেন্স থেকে তিনি মুক্তি পাবেন। তবে ওবামাকে এখনো আগামী ১৮ মাস কড়া নিরাপত্তার মধ্যে চলতে হবে।
একটি কথা প্রচলিত যুক্তরাজ্যের রানি যেখানে যান সেখানে রঙের গন্ধ পাওয়া যায়। কারণ তাঁর আগমন উপলক্ষে সব কিছু নতুন করে সাজানো হয়। এর চেয়ে কম সুবিধা পান না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।