‘শান্তি আলোচনার’ জন্য প্রস্তুত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা
রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই ডজনেরও বেশি ক্যাম্পে হামলার অংশ নেওয়া রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) একতরফাভাবে অস্ত্রবিরতির ঘোষণার পর এবার শান্তি আলোচনায় বসার জন্য নিজেদের প্রস্তুতির বার্তা দিয়েছে।
এক মাসের অস্ত্রবিরতির ঘোষণার শেষ পর্যায়ে এসে আজ শনিবার এক বিবৃতিতে আরসা এই আহ্বান জানিয়েছে। যদিও সোমবার মধ্যরাতে শেষ হওয়া এই অস্ত্রবিরতির পর সংগঠনটির পক্ষ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু উল্লেখ করা হয়নি বিবৃতিতে।
তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অব্যাহত নিপীড়ন ও অত্যাচার বন্ধ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছে।
আরসা বিবৃতিতে বলেছে, ‘যেকোনো পর্যায়েই হোক, বার্মার সরকার যদি শান্তির জন্য কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়, তাহলে আরসা তাকে স্বাগত জানাবে এবং এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে।’
রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের এই আহ্বানের ব্যাপারে কথা বলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর যখন আরসা অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল তখন সরকার একে ভালভাবে নেয়নি। সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছিল, ‘আপস-মীমাংসার জন্য সরকার কোনো ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করবে না।’
গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর জাতিসংঘের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রাখাইন থেকে মোট পাঁচ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গত ছয় সপ্তাহে এটি বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
রাখাইন অঞ্চলে যারা রয়ে গেছে তাদের কাছে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি পৌঁছাতে পারছে না বলে জানায় জাতিসংঘ। এখনো রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অভিযোগ করছেন, সেনাবাহিনী সেখানকার পুরুষদের ধরে নিয়ে হত্যা করছে আর নারীরা প্রতিনিয়ত ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, রোহিঙ্গাদের চারশোরও বেশি গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।