দেশে ফিরতে চান নূর হোসেন!
দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন। আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলা সদর বারাসত আদালতে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের তিনি বললেন, ‘আমি আমার দেশ বাংলাদশে ফিরে যেতে চাই।’
তবে নূর হোসেনকে বাংলাদেশের হাতে প্রত্যর্পণের বিষয়টি আবারও পিছিয়েছে। আদালত এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আগামী ৩ অক্টোবর।
ভারতে অনুপ্রবেশ মামলায় নূর হোসেনের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে গত ২৪ আগস্ট বারাসত আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই মামলায় সরকারি আইনজীবী শান্তময় বসু জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের সবুজ সংকেতে রাজ্য সরকার ৩২১ ধারায় একটি আবেদন দাখিল করে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চায়। যে কারণে তাঁরা আদালতের কাছে ওই আবেদন জমা দেয়।
আজ সোমবার সেই আবেদনের জবাবে খান সুমন ও ওহাদুজ্জামান শামিমের আইনজীবী অনুপ ঘোষ জানান, আমরা সরকারের তরফে করা ৩২১ আবেদনের একটা শুনানির আবেদন করেছি বিচারকের কাছে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বারাসত নিন্ম আদালতের বিচারক মিস্টার চক্রবর্তী এই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন ৩ অক্টোবর। আইনজীবী অনুপ ঘোষ বলেন, ‘সরকার নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা রুজু করার পর এখন মামলা তুলে নিতে চাইছে। কী কারণে এই মামলা তুলে নেওয়া হবে এবং নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেটা স্পষ্ট করার দাবিতেই এই শুনানির আবেদন করা হয়েছে। অনুপ ঘোষ আরো বলেন, ‘নূর হোসেনের এরইমধ্যে এক বছরের ওপর জেল খাটা হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে নূর হোসেনেরও কিছু বলার আছে। আদালত তাঁর বক্তব্য যেন শোনে সেই কারণেই আমরা একটা শুনানির আবেদন জানিয়েছি। এর আগে বারাসতের জেলা জজ আদালতের বিচারক প্রবীর কুমার মিশ্রের এজলাস থেকে এই মামলা পাঠিয়ে দেওয়া হয় নিম্ন আদালতে।
আজ সোমবার আদালতে নূর হোসেন এবং ওহাদুজ্জামান শামিম উপস্থিত থাকলেও হাজির হননি খান সুমন। খান সুমনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আগামী ৩ অক্টোবর বিচারক নূর হোসেনের পাশাপাশি ওহাদুজ্জামান শামিমকেও আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান অনুপ ঘোষ।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নূরের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা তুলে নেওয়ার কারণ হিসেবে বারাসত আদালতের একাধিক আইনজীবী মনে করছেন, মামলা তুলে নেওয়ার পরই নূরকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। যেহেতু নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার নোটিশ’ জারি আছে, সেহেতু ভারত-বাংলাদেশ বন্দী বিনিময় চুক্তি মেনেই তাঁকে খুব সহজে বাংলাদেশের হাতে প্রত্যর্পণ করা যাবে।
নূর হোসেন বর্তমানে দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন। নূরের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা থাকায় তাঁকে সেই মামলার আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের হাতে প্রত্যর্পণ করতে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। যে কারণে রাজ্য সরকার নূরের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে সহজে বাংলাদেশের হাতে প্রত্যর্পণ করতে চাইছে বলে মনে করেন আইনজীবী অনুপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘তবে এই মামলায় নূরের বিরুদ্ধে সরকারি আইনজীবীর মাধ্যমে রাজ্য সরকার মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছে। আমরা ওই আবেদনের শুনানি দাবি করেছি। আমাদের সেই আর্জি মেনে নিয়ে বিচাররক পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। আগামী ৩ অক্টোবর সেই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’