‘খাসোগিকে হত্যার পর টুকরো টুকরো করা হয়’
তুরস্কে নিখোঁজ সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার পর তাঁর লাশ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএন তুরস্ক সরকারের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সৌদি সাংবাদিক খাসোগি বেঁচে নেই। তাঁকে হত্যার পর তাঁর লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে।
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা বাহিনী ‘জেনারেল ইন্টেলিজেন্স প্রেসিডেন্সি’র উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে একটি দল ইস্তাম্বুলে খাসোগিকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং অপহরণের ঘটনায় জড়িত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট তিনজনের বরাত দিয়ে এসব কথা জানায় সিএনএন।
ওই উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানেরও ঘনিষ্ঠজন বলে জানান সিএনএনের ওই তিন সূত্রের একজন। তবে যুবরাজ সাংবাদিক খাসোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি সরাসরি অনুমোদন দিয়েছিলেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিএনএন বলছে, নামের আদ্যক্ষর দিয়ে ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত প্রতাপশালী সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ইশারা ছাড়া সাংবাদিক খাসোগি হত্যার এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়।
এ ঘটনায় সবাই সৌদি প্রশাসনকে দুষলেও, বাস্তবে কী হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানেন না বলে দাবি করেছেন সৌদির প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় যুবরাজের এই দাবির কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে এক টুইটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লিখেছেন, অতি দ্রুততার সঙ্গে খাসোগি নিখোঁজের ঘটনায় বিস্তারিত এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চান সৌদি যুবরাজ।
এদিন বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প সৌদি আরবের পক্ষ নিয়ে বলেন, ‘খাসোগি ইস্যুতে নিরপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সবাই সৌদি আরবকেই দোষী সাব্যস্ত করছে।’ এর আগে মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম দাবি করেছিলেন, যুবরাজের ইশারাতেই হত্যা করা হয়েছে সৌদি আরবের এই সাংবাদিককে।
ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে তুর্কি পুলিশ তল্লাশি চালানোর পর তুর্কি সরকার সাংবাদিক খাসোগি হত্যাসহ লাশ টুকরো টুকরো করার বিষয়গুলো জানতে পেরেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার বিকেলে কনস্যুলেট ভবনে ঢুকে মঙ্গলবার সকালে সেখান থেকে বের হন তুরস্কের পুলিশ সদস্যরা।
তুরস্ক সরকারের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এর আগে জানায়, ১৫ সদস্যের একটি দল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সৌদি আরব থেকে তুরস্কে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞও ছিলেন বলে জানা যায়।