সন্তানকে কোন বয়সে মোবাইল দেবেন? বিল গেটস কী বলেন
‘সন্তান লালনপালন আসলে ছেলেখেলা নয়’—অভিভাবক মাত্রই কথাটি একবাক্যে স্বীকার করে নেবেন। কিছুদিন আগেও আপনার যে সন্তান আপনাকে ভালোবেসে চুমু দিতে পছন্দ করত, হঠাৎ কী এমন হয়েছে তার আর সেসব ভালো লাগছে না, সময়মতো স্কুলের পড়া শেষ করছে না, আবার সময়মতো ঘুমাতেও যাচ্ছে না। আজকালকার অভিভাবকরা এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন হরহামেশাই।
সে জন্য অভিভাবকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে শিশুর বেড়ে ওঠা কেমন হবে। তাই শিশুর হাতে কবে মোবাইল তুলে দেবেন, সে সিদ্ধান্ত অভিভাবকদেরই নিতে হবে। প্রযুক্তির আগ্রাসনের যুগে সন্তানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের বিকল্প নেই।
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রযুক্তিসম্রাট বিল গেটস এ বিষয়ে কী বলেন? তাঁর মতে, ১৪ বছরের আগে কোনোভাবেই সন্তানের হাতে মোবাইল ফোন দেওয়া যাবে না। তাঁর সন্তানের বয়স ২০, ১৭ ও ১৪। তাঁদের কেউই মাধ্যমিক স্কুলে ওঠার আগে মোবাইল হাতে পাননি। এর আগেও সন্তানদের মোবাইল ব্যবহার নিয়ে কড়াকড়ির কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
বিল গেটসের এই সিদ্ধান্তটি আপনার কাছে কঠিন মনে হলে ২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘কিডস অ্যান্ড টেক : দ্য ইভল্যুশন অব টুডেজ ডিজিটাল ন্যাটিভস’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি দেখতে পারেন। তাতে দেখা যায়, বিশ্বের যেসব শিশু মোবাইল ব্যবহার করছে, গড়ে তারা ১০ বছর তিন মাসে মোবাইল ফোন হাতে পাচ্ছে। আর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে গড়ে ১১ বছর তিন মাস বয়সে অ্যাকাউন্ট খুলছে তারা।
তবে সন্তানকে বারণ করতে হলে অবশ্যই আগে বাবা-মাকেও নিজেদের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা সময় কমাতে হবে। নিজেরা যা করছেন না, তা সন্তানকে বলবেন কী করে। নিজেদের দৈনন্দিন কাজকর্মে সময়ের গুরুত্ব বজায় রাখতে পারলে সন্তানের বেড়ে ওঠায়ও তা প্রভাব ফেলে।
তবে সারা দুনিয়ার সচেতন তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ইদানীং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে প্রযুক্তিবর্জিত সময় পার করার নানাবিধ কৌশল। যেমন তারা ঘটা করে কোনো ডিভাইস ছাড়া ডিনারের ধারণা প্রচার করছে। অনেকে প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার না করে একটি দিন পার করাকে হাল ফ্যাশনের আন্দোলন আকারে নিয়েছে। এগুলোকে ডিভাইস ফ্রি ডে বা ডিভাইস ফ্রি ডিনার ইত্যাদি নামে ডাকছে তারা।