বিজেপি সভাপতির তুরুপের তাস বাংলাদেশ
আসামে চলছে নির্বাচনী ঘনঘটা। এমন সময়ে ভোটারদের চাঙ্গা করতে বাংলাদেশের নামে তুরুপের তাস চেলেছেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি অমিত শাহ। এই চালেই ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ১৪টি আসনের সাতটিতেই জয় পেয়েছিল তাঁর দল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
গতকাল বুধবার আসামের কোকরাঝাড় ও নাগাও এলাকার দুটি সমাবেশে বক্তব্য দেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের ভোটের রাজনীতিই আসামে অবৈধ বাংলাদেশি প্রবেশের জন্য দায়ী। এর জন্য কংগ্রেসের নেতৃত্বই দায়ী। তাই রাজ্যকে আরো শক্তিশালী করতে বিজেপিকে ভোট দিন। তাহলে নতুন করে আর কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটবে না।’
অমিত শাহ অভিযোগ করে বলেন, ইচ্ছা করেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অরক্ষিত করে রেখেছে কংগ্রেস। অবৈধ অভিবাসীর হাত থেকে রেহাই পেতে আসামে বিজেপিশাসিত সরকার দরকার।
বিজেপির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের এমন একটি সরকার দরকার, যারা সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখবে। কারণ এটির সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত। অনুপ্রবেশকারীরা দেশের সবখানে ছড়িয়ে পড়ছে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে ভূমি বিনিময় চুক্তির পর সীমান্ত এলাকায় প্রাচীর নির্মাণের যে কাজ চলছে, তাতে অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন অমিত শাহ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গণ্ডার শিকার-পাচার এবং দুর্নীতির প্রসঙ্গে আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর সরকারের সমালোচনা করেন অমিত শাহ।
‘গত তিন বছরে রাজ্যের অন্তত ১০০ গণ্ডারকে চোরাশিকারিরা হত্যা করেছে। এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে আসামে আর ১০ বছর পর কোনো গণ্ডারই থাকবে না। ১৫ বছর ধরে আসাম শাসন করছে কংগ্রেস। কিন্তু আসামের কোনো উন্নতিই হচ্ছে না। দেশের চতুর্থ দরিদ্র রাজ্য আসাম। এত অধিক মাত্রায় দুর্নীতি থাকলে কোনো রাজ্য সামনে এগিয়ে যেতে পারে না’, বলেন অমিত শাহ।
২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিয়ে অমিত শাহর মতোই মন্তব্য করেছিলেন। এক সমাবেশে মোদি বলেছিলেন, ‘আপনারা লিখে রাখতে পারেন, ২০১৬ সালের মে মাসের পরে এই অবৈধ বাংলাদেশিরা তাদের ব্যাগ প্রস্তুত করবেন ভারত ছাড়ার জন্য।’
বিজেপির এই কথার রাজনীতির জবাবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ গতকাল অনেকটা পরিহাস করেই বলেছেন, ‘একমাত্র নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই বাংলাদেশিদের কথা মনে পড়ে বিজেপির।’