রুশদিকে হত্যায় ইরানের নতুন পুরস্কার ঘোষণা
ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রখ্যাত ব্রিটিশ সাহিত্যিক সালমান রুশদিকে হত্যার জন্য নতুন করে ছয় লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদিকে হত্যার জন্য ঘোষিত পুরস্কারের সঙ্গে আরো ছয় লাখ মার্কিন ডলার যোগ করার ঘোষণা দিয়েছে।
ইরানে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খামেনি প্রথম ১৯৮৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক রুশদির মাথার বিনিময়ে ৩০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন। তাঁর লেখা 'স্যাটানিক ভার্সেস' উপন্যাসটিতে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। আর ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে রুশদিকে হত্যার এই ফতোয়া দেন খামেনি। সে ঘোষণার বার্ষিকীতে নতুন করে এ ঘোষণা দিল দেশটির মিডিয়াগুলো।
১৯৮৯ সালে রুশদিকে হত্যার জন্য পুরস্কারের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৫ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১২ সালে পুরস্কারের অঙ্ক বাড়িয়ে ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার করা হয়। এর সাথে ঘোষিত নয়া পুরস্কারের অংশ যোগ করে বর্তমানে রুশদিকে হত্যার জন্য পুরস্কারের পরিমাণ দাঁড়াল ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার।
ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ফারস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ৪০টি সংবাদমাধ্যম মিলিতভাবে এ পুরস্কার ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ফারসের অবদানই সবচেয়ে বেশি। পুরস্কারের প্রায় ১০০ কোটি রিয়াল (৩০ হাজার ডলার) দেবে এ সংস্থা।
রয়টার্স জানিয়েছে, নব্বইয়ের দশকে ফতোয়া ঘোষণার পর রুশদি নয় বছর আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হন। ১৯৯১ সালে উপন্যাসটির জাপানি ভাষার অনুবাদক ছুরিকাঘাতে নিহত হন এবং বইটির প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপরও নানাভাবে আঘাত আসে।
তবে সাবেক ইরানি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি বলেছিলেন, ফতোয়াটি ১৯৯৮ সালে শেষ হয়ে গেছে। তবে দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো এটি প্রত্যাহার করেনি। অবশ্য খামেনির উত্তরসূরী আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ২০০৫ সালেও বলেছেন, ফতোয়া এখনো জারি রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদসংস্থা দ্য ইনডিপেনডেন্ট রুশদির প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে রুশদির কোনো মন্তব্য নেই। এ ছাড়া ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।