সংস্কৃতি বিনিময়ে দুই বাংলার বাঙালিরাই যথেষ্ট, বললেন আসাদুজ্জামান নূর
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যে সংস্কৃতি বিনিময়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা না থাকাই ভালো। দুই বাংলার বাঙালিরাই এটি করে নিতে পারবে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার আর্টস একর ফাউন্ডেশনে এক চিত্রশিল্প কর্মশালায় এ কথা বলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিনদিনের কর্মশালার কাল ছিল শেষ দিন।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, দুই বাংলা একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যস্তরেই এই ব্যবস্থা করে নেওয়া যায়।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর আরো বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এই বাংলার (পশ্চিমবঙ্গ) অনেক শহীদের রক্ত ঝরেছে। বাঙালির ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ এমন কি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডেও প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছিল পশ্চিমবাংলার মানুষ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পশ্চিবাংলার মানুষ যে অপরিসীম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার কোনো তুলনা নেই। সুতরাং এক বাংলা আরেক বাংলার সঙ্গে কথা বলবে মন খুলে, আদান-প্রদান হবে ভাবের, পরস্পরের মধ্যে রং-তুলির বিনিময় হবে, এটাই কাম্য।
শুক্রবার চিত্রশিল্পের কর্মশালার শেষ দিনে আর্টস একর ফাউন্ডেশন ট্রাস্টি বোর্ডে বাংলাদেশ থেকে আসা শিল্পীদের অভিনন্দন জানান কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পপতি হর্ষবর্ধন নেওটিয়া। কলকাতার চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন যেভাবে নিজে ছবি আঁকার পাশাপাশি আর্টস একরের প্রতিষ্ঠা করেছেন তারও প্রশংসা করেন হর্ষবর্ধন নেওটিয়া ও বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীরা। আর এবারই প্রথম কলকাতার কোনো চিত্র প্রতিষ্ঠানে তৈরি হলো বাংলাদেশ গ্যালারি। এখানে শুধু বাংলাদেশের শিল্পীদের চিত্রকর্মই প্রদর্শিত হবে।
কর্মশালায় অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যান একঝাঁক নবীন ও প্রবীণ চিত্রশিল্পী। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে ছিলেন, রফিকুন নবী, রঞ্জিত রায়, ফরিদা জামান প্রমুখ।
বাংলাদেশের প্রবীণ চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী বলেন, কলকাতার আর্ট কলেজ থেকেই জয়নুল আবেদিন প্রথম বাংলাদেশের চিত্রশিল্পের বাতাবরণ করেছিলেন। পরে তাঁর পথ অনুসরণ করে পরবর্তী প্রজন্ম বাংলাদেশের চিত্রশিল্পকে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে পেরেছে।
চিত্রশিল্প কর্মশালায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চিত্রশিল্পীরা ছবি আঁকেন এবং পশ্চিমবাংলার চিত্রশিল্পীদের সঙ্গে কবিতা ও গানের মাধ্যমে আড্ডা দেন। অনুষ্ঠানের শেষ দিনে সমবেত দুই বাংলার চিত্রশিল্পীদের মধ্যে একটাই মত প্রস্ফুটিত হয়। তা হলো, দুই বাংলার বাঙালিরা কেন তাদের মনের ভাব বিনিময়ে তাকিয়ে থাকবে কেন্দ্রের দিকে। বাঙালি যেভাবে বাঙালিকে চেনে তা অন্য রাজ্যের অধিবাসীরা জানে না। তাই দুই বাংলার বাঙালিদের ভাবের বিনিময় যত তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা যায় ততই ভালো। কেননা, শিল্পকে কোনো সীমা ও কাঁটাতারের বেড়ায় বাঁধা যায় না।