বাংলাদেশের মানুষের গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ চান ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ সদস্যদের কঠোর নজরদারি করতে বলেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে গরু পাচার বন্ধ করতে হবে, যাতে করে বাংলাদেশের মানুষ গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়।
গতকাল বুধবার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার একটি সীমান্তবর্তী ফাঁড়ি পরিদর্শনের সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের জওয়ানদের উদ্দেশে এ কথা বলেন রাজনাথ সিং। ভারতজুড়ে গো-হত্যা বন্ধের আহ্বান জানানোর কয়েক দিন পর দেশটির কেন্দ্রীয় একজন মন্ত্রী এমন কথা বললেন।
রাজনাথ সিং জানান, বিএসএফ জওয়ানদের নজরদারির কারণে এরই মধ্যে বাংলাদেশে গরু পাচারের হার কমে গেছে। ফলে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
বিএসএফ জওয়ানদের উদ্দেশে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সীমান্তে কঠোর নজরদারি বজায় রাখুন, যেন বাংলাদেশে গরু পাচার একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বেড়ে যায়, যাতে করে দেশটির মানুষ গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।’
ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ভারত থেকে কমপক্ষে ১৭ লাখ গবাদিপশু বাংলাদেশে পাচার হয়েছে।
‘জওয়ানের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব নয়’
বিএসএফ জওয়ানদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করা হবে না বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁর এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে কট্টরপন্থা অবলম্বনের ইঙ্গিত দেওয়া হলো বলে মনে করছে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য হিন্দু।
সীমান্তে হত্যা প্রসঙ্গে রাজনাথ সিং বলেন, ‘প্রাণঘাতী নয় এমন কৌশলের মতো আর কিছু নেই। গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখা। আমাদের জওয়ানদের ওপর আক্রমণ করা হবে আর তারা আত্মরক্ষায় গুলিও চালাতে পারবে না, আমি এটা হতে দিতে পারি না।’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং আমাদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা চাই, ভবিষ্যতেও এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকবে, তবে তা অবশ্যই আমাদের জওয়ানদের জীবনের বিনিময়ে নয়।’
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রাণহানি কমাতে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স সরকার বিএসএফের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তবে বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে তার কোনো সন্দেহ নেই বলে নিশ্চিত করেছেন রাজনাথ সিং।
বিএসএফের দেওয়া তথ্যমতে, ভারতের সংবাদমাধ্যম দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, গত তিন বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চোরাকারবারিদের আক্রমণে অন্তত তিন সীমান্তরক্ষী নিহত ও ৫০০ জন আহত হয়েছেন।