তীব্র গরমে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, পানি ব্যবহারে বিধিনিষেধ
তীব্র গরমে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য। এর ফলে দেশটিতে খাবার পানির রেকর্ড চাহিদা দেখা গেছে। এরই মধ্যে পানি ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ ব্রিটেনের কয়েক লাখ বাসিন্দার ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বাগানে হোস পাইপ দিয়ে পানি দিতে নিষেধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বরাতে আজ শুক্রবার (১৬ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
সাউদার্ন কেন্ট ও সসেক্সের বাসিন্দাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে জুনের ২৬ তারিখ থেকে। পূর্বাভাসকারীদের অনুমান, আসন্ন গ্রীষ্মে তেমন বৃষ্টি হবে না এসব এলাকায়।
কেন্টে পানি সরবরাহকারী সংস্থা সাউথ ইস্ট ওয়াটার বলছে, জুনে পানির চাহিদা আগের রেকর্ড ভেঙেছে। এই মাসের প্রতিদিন সংস্থাটি অতিরিক্ত ১২ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করেছে।
টয়লেটে পানির অভাবে পশ্চিম সসেক্সের তিনটি স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
সাউথ ইস্ট ওয়াটারের প্রধান নির্বাহী ডেভিড হিন্টন বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের অতিপ্রয়োজনীয় কাজ বাদে পানি ব্যবহার না করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। দুঃখজনকভাবে তা হয়নি। এখন আর আমাদের কাছে কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে কেন্ট ও সসেক্সের গ্রাহকদের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
কেন্টের বাসিন্দাদের পানি সরবরাহকারী সংস্থাটি গতকাল বৃহস্পতিবার একটি সতর্কতা জারি করেছে। কাউন্টিতে পানির চাহিদা সরবরাহ চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় তারা এই সতর্কতা জারি করে। সাউথ ইস্ট ওয়াটার বলছে, আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি বছরে চাহিদা বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
অতিরিক্ত চাহিদা, কম সরবরাহ
অতিরিক্ত চাহিদা ও কম সরবরাহের জন্যই হোস পাইপে বাগানে পানি দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বাগানে পানি দেওয়া, পুল পানিতে পূর্ণ করা, গাড়ি ধোয়াসহ অপ্রয়োজনীয় কাজে পানি ব্যবহার রোধেই এমনটি করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীকে এক হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হবে।
ইংল্যান্ডের আবহাওয়া সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালের সঙ্গে যৌথভাবে গত বছর দেশটিতে উষ্ণ গ্রীষ্ম রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়।
অনাবৃষ্টি ও তীব্র গরমের জন্য ইংল্যান্ডের জলধারাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি কমেছে নদীগুলোতেও।
এদিকে, গত মাসের শেষের দিকে স্কটল্যান্ডেও পানি নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। স্কটিশ এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন এজেন্সি (এসইপিএ) এই সতর্কতা জারি করে জানায়, দেশের প্রতিটি রাজ্যেই পানির সংকট রয়েছে।
এসইপিএর ওয়াটার প্ল্যানিংয়ের প্রধান নাথান ক্রিচলো-ওয়াটন বলেন, ‘আমাদের নদী ও জলধারাগুলো প্রচণ্ড চাপে রয়েছে। আমাদের উচিত তাদের রক্ষা করা।’