বেলারুশে পৌঁছেছেন ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন
রাশিয়ায় বিদ্রোহের ব্যর্থ চেষ্টার পর বেলারুশে গিয়ে আশ্রয় নিলেন দেশটির ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন। মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেলে বেলারুশের রাষ্ট্রপ্রধান নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিন বেলারুশে পৌঁছেছেন।’
গত সপ্তাহের শেষের দিকে রাশিয়ায় বিদ্রোহের চেষ্টা করেছিলেন ওয়াগনার প্রধান। তার আগে অবশ্য রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল ওয়াগনার। তারা ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখলও করেছিল। কিন্তু, গত কয়েকমাস ধরে তারা ক্রমাগত রাশিয়ার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলছিল। গত সপ্তাহান্তে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মস্কো অভিযানের চেষ্টা করেছিল। তবে, শেষপর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হস্তক্ষেপে তারা সে কাজে বিরত হয়।
বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে প্রিগোজিনের আর তেমন খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা ছিল, তিনি রাশিয়াতেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে মঙ্গলবার বিকেলে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট স্বয়ং জানান, ভাগনার প্রধান বেলারুশে পৌঁছেছেন। একটি বিজনেস জেটে রাশিয়ার রোস্তভ থেকে মিনস্কে পৌঁছেন ওয়াগনার প্রধান। ফ্লাইট রাডার প্লেনটির তথ্য নিশ্চিত করলেও তার ভেতরে প্রিগোজিন ছিলেন কি না, তা জানাতে পারেনি।
লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় ওয়াগনার তাদের বিদ্রোহ মাঝপথে স্থগিত করেছে। এরপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছিলেন, বিদ্রোহী ওয়াগনার সেনারা চাইলে বেলারুশে গিয়ে থাকতে পারেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে লুকাশেঙ্কো জানিয়েছিলেন, ওয়াগনারের সৈন্য ও তাদের প্রধান যদি বেলারুশে যান, তাহলে তারা বেলারুশের সামরিক শক্তি আরও বাড়াবে। ফলে কার্যত ওয়াগনার প্রধানকে আগেই আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
পোল্যান্ডের প্রতিক্রিয়া
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট দুদা এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘বেলারুশে ওয়াগনার সেনার উপস্থিতি পোল্যান্ডের জন্য যথেষ্ট চিন্তার কারণ। এর বিরুদ্ধে দ্রুত কড়া জবাব দেওয়া উচিত ন্যাটোর।’
পোল্যান্ডের সঙ্গে বেলারুশের সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে তীব্র বিরোধও আছে। এই পরিস্থিতিতে বেলারুশ ওয়াগনার সৈন্যদের পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে বলে দুদার আশঙ্কা। লিথুয়ানিয়াও তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘আপাতত বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখা ছাড়া আর কিছু করণীয় নেই। এখনই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।’
ন্যাটো প্রধান আরও জানান, বেলারুশ ও রাশিয়াকে একটি বার্তা আগেই দিয়ে রেখেছেন তিনি। ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য ন্যাটো সব রকম ব্যবস্থা নিতে পারে। এক ইঞ্চি জমিও তারা ছাড়বে না।
এদিকে বেলারুশের গণতন্ত্রপন্থী বিরোধীপক্ষ ওয়াগনার বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য, নিজের দেশের বিরোধীদের বিরুদ্ধেও এই সৈন্যদের ব্যবহার করতে পারেন লুকাশেঙ্কো।