আইএমএফের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পাচ্ছে পাকিস্তান
পাকিস্তানের চলমান অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে দেশটিকে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ইতোমধ্যে কর্মকর্তা পর্যায়ে চুক্তিও শেষ করেছে দুপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিন শেষে ওয়াশিংটনে আইএমএফের সদরদপ্তর থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানায়, দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে পাকিস্তান। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ নেই। এমনকি, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার জন্য নতুন করে বৈদেশিক বিনিয়োগও হচ্ছে না পারমাণবিক শক্তিধর দেশটিতে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতির গতি আকাশচুম্বী। মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের মুদ্রা রুপি ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ডলারের সংকটে আমদানি করা যাচ্ছে না। এতে করে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিল্পকারখানার উৎপাদন।
পাকিস্তানকে জরুরি সহায়তা ঋণ দেওয়া নিয়ে আইএফএমের কর্মকর্তা নাথান পর্টার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি এটি ঘোষণা করতে পেরে খুবই আনন্দিত হচ্ছি যে, পাকিস্তানি ও আইএমএফ কর্মকর্তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। দীর্ঘ নয় মাস ধরে আলোচনার পর জরুরি সহায়তা নীতির মাধ্যমে পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার দেওয়ার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।’
কর্মকর্তাদের মধ্যে চুক্তি হলেও ঋণের অর্থ এখনই পাচ্ছে না পাকিস্তান। আগামী জুলাইয়ে আইএমএফের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাবটি তোলা হবে। সেখানে পাস হলেই অর্থ পাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।
২০১৯ সালে আইএমএফের সঙ্গে ৬৫০ কোটি ডলারের বেইল আউট ঋণের চুক্তি হয় পাকিস্তানের। সেই ঋণের সর্বশেষ ধাপের অর্থ গত নভেম্বরে স্থগিত করে আইএমএফ কর্তৃপক্ষ। দেশটির জাতীয় বাজেটে শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন এনে আইএমএফের শর্ত লঙ্ঘন করে পাকিস্তান সরকার। এর জেরেই ঋণের সর্বশেষ ধাপের অর্থ আটকে দেয় সংস্থাটি।
যে প্যাকেজের আওতায় পাকিস্তানকে ঋণ দিয়েছিল আইএমএফ সেটির সময় শেষ হবে আজ। পর্টার বলেন, ‘নতুন চুক্তিটি আগের চুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।’
এদিকে, ঋণের প্রাথমিক চুক্তির ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক পোস্টে ইশাক দার লেখেন, ‘আলহামদুল্লিাহ।’ তবে, এক্ষেত্রে পাকিস্তান সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মাইকেল কুগেলমান। ঋণ পেতে পাকিস্তানের মন্থরগতি নিয়ে সমালোচনা করেছেন তিনি। এক টুইট বার্তায় কুগেলমান লেখেন, ‘ইসলামাবাদ নিজেদের পলিসি ঠিক করতে শেষ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিল। অন্যদিকে, আইএমএফ মাসখানেক ধরে চুক্তির জন্য চেষ্টা চালিয়েছে।’