জেনিন ও রামাল্লায় ইসরায়েলি হামলায় ৯ ফিলিস্তিনি নিহত
অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে কয়েকশত ইসরায়েলি সেনার স্থল ও আকাশপথের অভিযানে আট জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া রামাল্লায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে আরও একজন ফিলিস্তিনি।
সর্বাত্মক এই হামলার পর জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য আহতদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পথ করে দিতে আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। তবে, ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইসরায়েল জেনিন থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান পুরো পশ্চিম তীরে বিস্তৃত করতে ইচ্ছুক নয়।
এদিকে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার জেনিন শিবিরে ইসরায়েলের এই আগ্রাসন আবারও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর সঙ্গে সংঘাতের সম্ভাবনাকে উসকে দিচ্ছে। গত দুই বছর থেকে জেনিন শরণার্থী শিবিরটি ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক হামলার শিকার হচ্ছে। খবর আলজাজিরার।
মোহাম্মদ কামানজি নামে একজন আইনজীবী এবং জেনিন ভিত্তিক মানবাধিকারবিষয়ক গবেষক আলজাজিরাকে জানান, শহর এবং আশ্রয় শিবিরের পরিস্থিতি খুবই জটিল। তিনি বলেন, ‘যা হচ্ছে সেটা হলো ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী শহর এবং শিবিরে তাণ্ডব চালাচ্ছে। পাশাপাশি আকাশ পথেও হামলা চালানো হচ্ছে।’
কামানজি আরও বলেন, ‘সশস্ত্র সামরিক যানবাহন নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী ছড়িয়ে রয়েছে পুরো এলাকায়। পাশাপাশি আছে বুলডোজার। সৈন্যরা এখন সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। নাগরিকদের সম্পত্তি, অবকাঠামো, শিবিরের ভেতরের রাস্তাঘাট সবকিছু তারা ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এই হামলা ২০০২ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় গণঅভ্যুত্থান বা ইন্তিফাদা আন্দোলনের পর পরিচালিত সবচেয়ে বড় অভিযান। ১৫০টি সাঁজোয়া যান নিয়ে এক হাজার এলিট স্পেশাল ফোর্স ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযানে অংশ নেয়। পাশাপাশি রয়েছে গোয়েন্দা, পুলিশ ও সীমান্ত পুলিশের সদস্যরা।
আজকের এই হামলায় ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে, ব্যবহার করে হেলিকপ্টার গানশিপ ও ড্রোন। এগুলোর সাহায্যে রাস্তাঘাট, বাড়িঘরসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ধ্বংস করে দেয় তারা।
এ ছাড়া শিবিরের চারপাশে চলাচলের পথগুলোতে অবস্থান নেয় সশস্ত্র স্নাইপাররা। এসময় কিছু ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলি বিনিময়ও হয়।
এদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলের ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জর্ডান, মিশর ও কাতার। আলাদা বিবৃতিতে দেশগুলো অধিকৃত ভূখণ্ডে সংঘাত থামাতে দ্রুত ও কার্যকর ভূমিকা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে, জেনিন পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।