থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হতে পার্লামেন্টে ভোট পেলেন না পিটা লিমজারোয়েনরাত
থাইল্যন্ডের সাধারণ নির্বাচনে বেশির ভাগ ভোট পেয়েছিল পিটা লিমজারোয়েনরাতের নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল দলটি। কিন্তু দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সমর্থন পেলেন না মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির এই নেতা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে ৪২ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী প্রার্থী কোনো রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান কিন্তু প্রয়োজনীয় সমর্থন তিনি পাননি। পিটা লিমজারোয়েনরাতের হেরে যাবার পেছনে প্রধান কারণ তার বিরুদ্ধে দেওয়া ভোট এবং ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকার ঘটনা। খবর আলজাজিরার।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পিটার নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোটের আসন সংখ্যা ৩১২টি। প্রধানমন্ত্রী হতে ৩৭৫টি আসন পেতে তার প্রয়োজন ছিল রক্ষণশীল উচ্চকক্ষের ২৪৯ সদস্যের সমর্থন। দেশটির পার্লামেন্টর উচ্চকক্ষের সদস্যরা সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে নিয়োগ পান। ভোটগ্রহণ শেষে পিটা ৩২৩ ভোট পান, যার মধ্যে ১৩ জন সেনেটরের ভোটও ছিল। থাইল্যান্ডের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এই তথ্য দিয়েছে। নির্বাচনে ১৮২ জন আইনপ্রণেতা পিটার বিপক্ষে ভোট দেয় আর ১৯৮ জন ভোটদানে বিরত থাকে।
আজকের এই ভোটাভুটি গত ১৪ মে দেশটির সাধারণ নির্বাচনে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ের পরও দলটির নেতার প্রধানমন্ত্রী হতে না পারা নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কাকেই সামনে নিয়ে আসছে। গত এক শতকে থাইল্যান্ডে ১২টিরও বেশি সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছিল।
এদিকে এই ভোটগ্রহণের আগে পিটা লিমজারোয়েনরাতের বিরুদ্ধে দুটি আইনি অভিযোগ তার প্রার্থীতার বিষয়ে বিরাট প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়। থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির রাজতন্ত্রের অবমাননা বিরোধী আইন সংস্কারের উদ্যোগের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করতে সম্মত হয়। এর কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটির নির্বাচন কমিশন পিটাকে পার্লামেন্টের সদস্য পদে অযোগ্য ঘোষণার জন্য আদালতের প্রতি সুপারিশ করে।
এই সুপারিশের পর একটি গণমাধ্যম কোম্পানির মালিক হিসেবে শেয়ার থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। থাইল্যান্ডে রাজনীতিবিদদের গণমাধ্যম কোম্পানিতে শেয়ার কেনার অনুমোদন নেই। যদিও পিটা জানিয়েছেন, ২০০৭ সাল থেকে ওই গণমাধ্যমটির সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে আর শেয়ারগুলো তিনি তার বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন।
পার্লামেন্টে আজ বৃহস্পতিবার পিটা লিমজারোয়েনরাত তার নিজের অবস্থান তুলে ধরেন ও আইনপ্রণেতাদের জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানান।
প্রথম দফায় ভোটে পিটা হেরে যাবার পর পার্লামেন্ট স্পিকার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া নাগাদ দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশন চালিয়ে যাবেন।
পিটা লিমজারোয়েনরাতের নেতৃত্বাধীন জোটকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামী ১৯ জুলাই দ্বিতীয় দফা ভোটাভুটিতে তাকেই সমর্থন দেবে নাকি অন্য কোনো প্রার্থী নির্বাচন করবে।