ফের সুদের হার বাড়াতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
মূল্যস্ফীতি রুখতে সুদের হার বাড়িয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ গত জুনে সুদের হার বাড়িয়েছিল বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি। এরই মধ্যে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছিল। তারপরও ফের সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বুধবার (২৬ জুলাই) সুদের হার বাড়ানো হতে পারে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ২২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে রক্ষণশীল আর্থিক অবস্থানের দিকে ঝুঁকছে ফেডারেল ব্যাংক।
আজ রোববার (২৩ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি। প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, সর্বশেষ এক বছর বা তার থেকে কিছুটা বেশি সময়ের মধ্যে ১০ বার সুদের হার বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ পরিশোধ নিয়েও বেশ চাপে রয়েছে দেশটির সরকার। পাশাপাশি ঋণ নিয়ে ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থাও বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। অর্থনীতিকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে আরও সময় চেয়েছিল নীতি নির্ধারকরা। এর জেরে গত মাসে নিজেদের আগ্রাসী মনোভাব থেকে সরে এসেছে ফেডারেল ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোরতা থেকে সরে আসার পরের সপ্তাহগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমে। নতুন করে সুদের হার বাড়ানো হবে কি না তা ঠিক করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার পরিমাপক কমিটির ভোটাভুটি হবে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২৫ বা ২৬ জুলাই সুদের হার কয়েক পয়েন্ট বাড়ানো হতে পারে।
এএফপি বলছে, ভোটাভুটির পর ফেড ফান্ডের হার পাঁচ দশমিক ২৫ থেকে পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশের মধ্যে রাখবে নীতি নির্ধারকরা, যা ২০০২ সালের পর সর্বোচ্চ হবে। পিটারসন ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের (পিআইআইই) সিনিয়র ফেলো জোসেফ গ্যাগনন এএফপিকে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত পরবর্তী সভায় ফেডারেল ব্যাংক ফেড ফান্ডের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়াবে। এ নিয়ে আমি বাজি থরতে পারি।’
ব্যাংক অব আমেরিকার প্রধান অর্থনীতিবিদ মাইকেল জাপেন সম্প্রতি এক নোটে লেখেন, ‘অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীরে ধীরে হচ্ছে।’ কেন সুদের হার বাড়ানো হতে পারে তা জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ লেখেন, ‘আমাদের ধারণা, কমিটির বেশিরভাগ সদস্য সরবরাহ ও চাহিদার সমন্বয় এবং মূল্যস্ফীতি কমার পরিস্থিতিকে ধরে রাখতে সুদের হার বাড়াবে।’
শিকাগোভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিএমই গ্রুপের মতে, ফিউচার ট্রেডারদের ৯৯ শতাংশই মনে করে ফেডারেল ব্যাংকের নীতি নির্ধারকরা আগামী বৈঠকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়াবে।
প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছে, চলতি মাসে সুদের হার বাড়ানো হবে এমনটি প্রত্যাশিত হলেও, কতটুকু বাড়ানো হবে তা এখনও অনিশ্চিত। মূল্যস্ফীতি দুই অংকের ঘরে ফের নিতে দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা করছে ফেডারেল ব্যাংক।