পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমাবেশে বোমা হামলা আত্মঘাতী
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলের সমাবেশে যে বোমা হামলা হয়েছে, তা আত্মঘাতী বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রিয়াজ আনোয়ার। এই হামলায় কমপক্ষে ৩৯ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও শতাধিক ব্যক্তি।
দেশটির কোয়ালিশন সরকারের শরীক দল জমিয়তে উলেমায়ে ইসলামের একটি সমাবেশে হামলার এ ঘটনা ঘটে বলে সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি জানিয়েছে দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি।
খাইবার পাখতুনেখোয়া প্রদেশে আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত ঘেঁষা খার শহরে ওই দলটির চারশ’ কর্মী-সমর্থকরা যখন একটি ছাউনির নিচে সমাবেশ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন এই বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত ২৪ বছর বয়সী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একজন সমর্থক সাবিহ উল্লাহ বলেন, ‘আমরা যখন কেন্দ্রীয় নেতাদের আসার অপেক্ষায় ছিলাম তখন হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে পুরো সমাবেশ প্রাঙ্গণ কেঁপে ওঠে। যখন আমার জ্ঞান ফিরে আসে, আমি নিজেকে অঙ্গ হারানো এক ব্যক্তির পাশে দেখতে পাই। সেখানকার বাতাসে ছিল মানুষের পোড়া মাংসের গন্ধ।’
এ প্রসঙ্গে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রিয়াজ আনোয়ার জানান, স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ৩৯ জনের মরদেহ রাখা আছে। এ ছাড়া এই বিস্ফোরণে আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে আরও ১২৩ জন, যাদের মধ্যে ১৭ জনের অবস্থা গুরুতর।
রিয়াজ আনোয়ার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এটা ছিল একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা। একজন পুরুষ সমাবেশের মঞ্চের খুব কাছে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।’
এদিকে, প্রাদেশিক গভর্নর হাজি গোলাম আলি মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
বিস্ফোরণের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, চারদিকে মানুষের ছিন্ন-ভিন্ন দেহ ছড়িয়ে আছে আর রক্তাক্ত আহত লোকদের স্বেচ্ছাসেবীরা অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিতে সাহায্য করছেন।
উল্লেখ্য, আগামী অক্টোবর বা নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভেঙে দেওয়া হবে। এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশটিতে রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার-প্রচারণার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পাকিস্তানে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হি লিফেংয়ের নেতৃত্বে শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের ইসলামাবাদ সফর শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে এই আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটল।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো সংগঠন বা গোষ্ঠী এই হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করেনি। তবে, জমিয়ত উলেমায়ে ইসলামের নেতাকর্মীরা এর আগে স্থানীয় ইসলামিক স্টেটের হামলার শিকার হয়েছিল।