ক্রিমিয়ার কাছে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার ট্যাঙ্কার ক্ষতিগ্রস্ত
অধিকৃত ক্রিমিয়ার কাছে রাশিয়ার কের্চ প্রণালিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার (৪ আগস্ট) গভীর রাতের এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাশিয়ার ট্যাঙ্কার। এর আগের দিন কৃষ্ণ সাগরে মস্কোর একটি জাহাজেও হামলা চালায় কিয়েভ বাহিনী। ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র আজ শনিবার (৫ আগস্ট) ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে গত মাসে বের হয়ে যায় রাশিয়া। কৃষ্ণ সাগরের চারপাশে কিয়েভ বাহিনীর সর্বশেষ হামলা গতকালেরটি।
ওই সূত্র এএফপিকে বলেন, ‘গতকাল গভীর রাতে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিউ ‘এসআইজি’ নামে রুশ ফেডারেশনের একটি বড় তেল ট্যাঙ্কারে হামলা চালায়। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ বাহিনীর জন্য এই ট্যাঙ্কার থেকে তেল সরবরাহ করা হতো।’
সূত্র আরও বলেন, ‘এই বিশেষ অভিযান সফল করতে ব্যবহৃত হয়েছে নৌবাহিনীর ড্রোন ও বিস্ফোরক। ইউক্রেনের জলসীমা থেকে নৌবাহিনী এই হামলা চালিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত তেলবাহী জাহাজটি জ্বালানিতে পরিপূর্ণ ছিল। এতে বিস্ফোরণ হলে অনেক দূরে থেকে আতশবাজির মতো দেখা যায়।’
ফরাসি সংবাদ সংস্থাটির হাতে ড্রোন হামলার একটি ভিডিও রয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বড় জাহাজের কাছে একটি জলযান পৌঁছাচ্ছে। এরপরেই ভিডিওটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এদিকে, রুশ ট্যাঙ্কারে হামলার কথা নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার ফেডারেল এজেন্সি ফর সি অ্যান্ড ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি। তারা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে কের্চ প্রণালির উত্তরে এসআইজি তেলবাহী জাহাজে এই হামলা চালানো হয়।
যে তেলবাহী ট্যাঙ্কারে ইউক্রেনীয় বাহিনী হামলা চালিয়েছে সেটির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সহায়তার জন্য এই তেলবাহী জাহাজ দিয়ে জ্বালানি পাঠিয়েছিল মস্কো। রুশ সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে লেখেন, ‘সামুদ্রিক ড্রোনের হামলায় এসআইজি জাহাজের ইঞ্জিন রুমে তলানি ফুটো হয়ে গেছে। জাহাজটি বর্তমানে ভেসে রয়েছে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তি জানিয়েছে, এই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রাশিয়ার হাইওয়ে ইনফরমেশন সেন্টার টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানায়, হামলার পর কের্চ প্রণালির একটি ব্রিজে (রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার সংযোগস্থাপনকারী সেতু) তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে করে ওই ব্রিজে জ্যামের সৃষ্টি হয়। তবে, শনিবার ভোর বেলায় ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছে, মস্কো-কিয়েভের যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়ায় একাধিক হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তবে, সম্প্রতি সময়ে এই হামলার পরিমাণ বেড়েছে। গত জুলাইয়ে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ড্রোন হামলায় কের্চ ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির চুক্তি থেকে বের হওয়ার পর থেকে রুশ জলযান লক্ষ্য করে হামলা বাড়িয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।