কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে গির্জায় আগুন
কোরআনের অবমাননা করার অভিযোগে পাকিস্তানে একটি খ্রিস্টান অধ্যুষিত অঞ্চলে গির্জায় আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বুধবার (১৬ আগস্ট) পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ফায়সলাবাদে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন জারানওয়ালা শহরের ওই এলাকার বেশ কিছু গির্জা এবং বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীদের অভিযোগ, ওই এলাকায় বসবাসকারী একটি পরিবার কোরআনের অবমাননা করেছে। সে কারণেই এই আক্রমণ। বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থি মুসলিম গোষ্ঠী এই আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ।
পাকিস্তানের খ্রিস্টান নেতা আকমল ভাট্টি বলেন, একটি মসজিদ থেকে এই আক্রমণের ঘোষণা দেওয়া হয়। এলাকার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। উন্মত্ত জনতা অন্তত পাঁচটি গির্জায় আগুন দিয়েছে। খালি বাড়িগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। দামি জিনিস লুট করা হয়েছে। পরে বেশ কয়েকটি বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় পুলিশ দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন পত্রিকাকে জানায়, এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। হামলাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাদেরকে এলাকা থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। কোরআন অবমাননার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
পাকিস্তানের বিশপ আজাদ মারশাল লাহোর থেকে বলেন, ‘খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব।’
পাকিস্তানের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার উল হক কাকার বলেন, ঘটনার ছবি দেখে তিনি শিউরে উঠেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিরাপত্তা বাহিনীকে এলাকা ঘিরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার আইন অত্যন্ত কড়া। এই আইনে মামলা হলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে, শতাধিক ব্যক্তি এই আইনে জেলে থাকলেও এখনও পর্যন্ত কারো মৃত্যুদণ্ড হয়নি। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে এর আগেও অবশ্য জনতার তাণ্ডব দেখেছে পাকিস্তান।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, আদালতেও এই মামলার শুনানি দ্রুত হয়। কারণ, এই মামলা ঘিরে আদালতেও উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।