পাকিস্তানে গির্জায় হামলার তদন্ত শুরু, গ্রেপ্তার ১৪৬
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ধর্ম-অবমাননার অভিযোগে পাঁচটি গির্জায় ক্ষুব্ধ মুসলিম জনতার আগুন ধরিয়ে দেওয়াসহ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কয়েক ডজন বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে দেশটির সরকার। প্রদেশটির শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কমপক্ষে ১৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর আলজাজিরার।
পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক উসমান আনোয়ার আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) জানান যে, এ ঘটনায় জড়িত আরও লোকজনকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ফয়সালাবাদ জেলার জারানওয়ালা শহরে গতকাল বুধবার শতশত লোক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী লোকজনের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলা চালানোর একদিন পর পুলিশের এই তৎপরতার সংবাদ পাওয়া গেল।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, জারানওয়ালা শহরের ইসা নাগরী এলাকার খ্রিস্টান কলোনিতে পবিত্র কোরআনের ছেঁড়া পাতায় অবমাননাকর মন্তব্যের রেশ ধরে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সহিংসতার এই ঘটনা ঘটে।
হামলায় যে পাঁচটি গির্জা আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে জারানওয়ালার সালভেশন আর্মি গির্জা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় বেশ কিছু লোক শহরের সবচেয়ে বড় গির্জাটির ছাদে ওঠে সেখান থেকে একটি ক্রুশ খুলে ফেলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে প্রকাশিত ভিডিওতে এ সময় পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
দুই লাখ ৩০ হাজার লোক অধ্যুষিত এই শহরে সহিংসতায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গোরস্থান সবখানেই আক্রমণ করা হয়।
নজীরবিহীন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়া দক্ষিণ এশীয় এই দেশটিতে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর দাবি করেছেন পবিত্র কোরআনের অবমাননার ঘটনাটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তবে তিনি এর বেশি আর কিছু বলেননি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বেশ কিছু পোস্টে আমির মীর বলেন, ‘গির্জার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।’
এদিকে সহিংসতার এই ঘটনায় পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কাকার নিন্দা জানিয়েছেন এবং হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এক্স পোস্টের এক বার্তায় কাকার বলেন, ‘আমি ফয়সালাবাদের জারানওয়ালার ঘটনা দেখে নিজেই পুড়ে গেছি। যারা আইন লঙ্ঘন করেছে ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’