এবার গ্রিসের সহায়তার আশ্বাস পেলেন জেলেনস্কি
এথেন্স সফরে গ্রিস ও আঞ্চলিক শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে যথেষ্ট সমর্থন ও সহায়তার আশ্বাস পেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি৷ এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চালাতে ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেবে গ্রিস৷
একের পর এক ইউরোপীয় দেশ সফর করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি নিজের দেশের জন্য আরও সমর্থন এবং সামরিক ও অন্যান্য সহায়তার অঙ্গীকার পাচ্ছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়পত্র পাওয়ার পর নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ক ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে৷ এবার গ্রিস ইউক্রেনের সামরিক পাইলটদের সেই যুদ্ধবিমান চালানোর প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে৷ জেলেনস্কি গ্রিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন৷
এথেন্সে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিসের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেনের ওডেসা শহর পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে গ্রিস সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে৷ ঐতিহাসিক কারণে সেখানে গ্রিক বংশোদ্ভূত অনেক ইউক্রেনীয় মানুষ বাস করেন বলে এথেন্স সেই কাজ করতে আগ্রহী৷ মিৎসোতাকিস ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের তীব্র নিন্দা করে আন্তর্জাতিক বিচার কাঠামোর আওতায় অপরাধীদের শাস্তি দাবি করেন৷ রাশিয়ার সঙ্গে বিশেষ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন সত্ত্বেও মিৎসোতাকিসের নেতৃত্বাধীন গ্রিস সরকার যুদ্ধের তীব্র নিন্দা করে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ গত বছর গ্রিস বেশ কয়েকজন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল৷
ন্যাটোর সদস্য দেশ গ্রিসের বিমানবাহিনীতে মূলত এফ-১৬ বিমানই রয়েছে৷ দেশটির পাইলটরা এমন বিমান চালাতে অত্যন্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ৷ নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ক এফ-১৬ বিমান দিলেও ইউক্রেনের পাইলট ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীদের দ্রুত প্রশিক্ষণ না দিলে সেই বিমান কাজে লাগাতে বিলম্ব ঘটবে৷ এ কারণে গ্রিসের প্রস্তাব বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ চলতি মাসেই ১১টি দেশের এক জোট ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করছে৷ ২০২৪ সালের শুরুতেই তারা এফ-১৬ বিমান চালাতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
শুধু গ্রিস নয়, জেলেনস্কি এথেন্সে গিয়ে বলকান ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করছেন৷ সার্বিয়া, কসোভো, বসনিয়া-হারজেগোভিনা, মন্টেনেগ্রো, ক্রোয়েশিয়া, রুমানিয়া, বুলগেরিয়া ও মলদোভার শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন ও ইউরোপীয় সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেলকেও সেই অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের বিষয়টি প্রাধান্য পেলেও জেলেনস্কির উপস্থিতির কারণে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনও বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে৷
শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার আগে জেলেনস্কি নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন৷ তিনি লেখেন, ‘ইউরোপীয় অঞ্চলে মানুষের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষাই আমাদের আসল লক্ষ্য৷ প্রতিদিনই আমরা আমাদের রাষ্ট্র, সৈন্য ও সহযোগীদের সঙ্গে সহযোগিতা জোরজার করছি৷’