পাকিস্তানে প্রতি দুই ঘণ্টায় একজন শিশু নিপীড়নের শিকার
চলতি বছরের প্রথমার্ধে পাকিস্তানে দুই হাজার ২২৭ জন শিশু নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এর মানে দাঁড়ায় প্রতি দুই ঘণ্টায় একজন করে শিশু নিপীড়নের শিকার হয়েছে। আর দিনের হিসেবে, প্রতিদিন গড়ে ১২ শিশু নিপীড়িত হয়েছে। দেশটির অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) বরাতে আজ শুক্রবার (২৫ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে পাকিস্তানে কতজন শিশু নিপীড়নের শিকার হয়েছে তার একটি প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদভিত্তিক এনজিও সাহিল। কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে দেশটিতে দুই হাজার ২২৭ শিশু নিপীড়িত হয়েছে।
১৯৯৬ সাল থেকে কার্যক্রম চালানো এনজিওটি সংবাদ মাধ্যম ও তাদের নিজেদের কাছে আস অভিযোগ থেকে প্রাপ্ত ডেটা থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে এক হাজার ২০৭ মেয়ে শিশু ও এক হাজার ২০ ছেলে শিশু নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
সাহিলের জাতীয় আইনি সহায়তা সমন্বয়কারী ইমতিয়াজ আহমেদ সুমরাহ আল-জাজিরাকে বলেন, ‘অপব্যবহারের শিকার বেশিরভাগ শিশুর বয়স ছয় থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। যৌন নিপীড়নের বেশি ঘটনা ঘটেছে ছেলে শিশুদের সঙ্গে। এ সময়ে ৫৯৩ ছেলে শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। অন্যদিকে, ৪৫৭ মেয়ে শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার।’
প্রতিবেদনে এনজিওটি জানিয়েছে, নিপীড়নের শিকার হওয়াদের মধ্যে ৯১২ জন শিশুই পরিচিতদের দ্বারা নিপীড়িত হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে। মোট নিপীড়নের ৭৫ শতাংশই এই প্রদেশটিতেই ঘটেছে।
সাহিলের তথ্য মতে, দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশে এ সময়ে ৩১৪টি নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। আর রাজধানী ইসলামাবাদে ১৬১ শিশু নিপীড়নের শিকার হয়েছে। বেলুচিস্তানে মাত্র ২৪টি নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে।
ইমতিয়াজ আহমেদ সুমরাহ বলেন, ‘আমাদের আইনি ব্যবস্থায় এসব জঘন্য অপরাধগুলো বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে। শিশুদের সঙ্গে হওয়া যৌন নিপীড়নের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার দুই শতাংশও নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মামলা দুপক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়।’