ড. ইউনূসকে আইনিভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, অভিযোগ জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার
বাংলাদেশে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মানবাধিকারকর্মী এবং সুশীল সমাজের নেতাদের ক্রমাগত ভয়ভীতি ও হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে এক বিবৃতিতে সংস্থাটি আরও বলেছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রায় এক দশক ধরে হয়রানি ও ভয়ভীতির সম্মুখীন হচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির অভিযোগে দুটি মামলার বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। এই দুটি মামলার রায়ে তাঁর কারাদণ্ড হওয়ার আশঙ্কা আছে।
আজ মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জেনেভা থেকে ওএইচসিএইচআরের হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এ বিবৃতি দেন। এতে তিনি বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ ও সুরক্ষায় মানবাধিকারকর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কাজের প্রয়োজনীয় নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ওএইচসিএইচআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যদিও ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ পাবেন। কিন্তু, আমরা উদ্বিগ্ন যে, তাঁর বিরুদ্ধে প্রায়ই সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাঁর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা আদিলুর রহমান খান ও নাসিরউদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলো আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এসব মামলার রায় আগামী বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করা হবে। এসব ফৌজদারি অভিযোগ ১০ বছর আগে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাঁরা দুজনই হয়রানি ও ভয়ভীতির শিকার হয়েছেন এবং তাঁদের সংস্থার নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি।’
ওএইচসিএইচআরের বিবৃতিতে বলা হয়, সুশীল সমাজের নেতা, মানবাধিকারকর্মী ও অন্যান্য ভিন্নমতাবলম্বী মানুষকে আইনিভাবে হয়রানি বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ ও গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এসব মামলা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার যথাযথ প্রক্রিয়া এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এসব মামলা কঠোরভাবে পর্যালোচনা করতে বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
ওএইচসিএইচআরের হাইকমিশনার বলেন, ‘বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনটি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এই আইনে জরিমানাসহ কারাদণ্ডের বিধান রাখাসহ বিভিন্ন অপরাধে জামিনের সুযোগ থাকবে। তবে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করতে আইনের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগের সমাধান করা জাতীয় সংসদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।