ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পরিতাপ থাকলেও নেই রাশিয়ার সমালোচনা
ভারতে চলমান জি-২০ সম্মেলনে একটি যৌথ ঘোষণা দিতে একমত হয়েছেন বিশ্বনেতারা। ওই ঘোষণায় রয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুটিও। বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর জোটটির দুদিনের সম্মেলনের প্রথম দিনে বিশ্ব নেতারা আঞ্চলিক লাভের জন্য বল প্রয়োগের নিন্দা করেছেন। কিন্তু, সরাসরি রাশিয়ার সমালোচনা করছেন না তারা। খবর বিবিসির।
যৌথ ঘোষণা নিয়ে ইউক্রেন সরকার বলছে, এটি গর্ব করার মতো কিছু নয়।
দিল্লিতে হওয়া সম্মেলনে বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণের ঊর্ধ্বগতি। তবে, সম্মেলনের প্রথম দিনে অপ্রত্যাশিত কিছু বড় শিরোনাম এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে ইউক্রেন ইস্যু।
ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে জোটটির বিভক্তি আগে থেকেই অনুমেয় ছিল। এর জেরে বিশেষজ্ঞরা শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনে খুব কমই একটি যৌথ ঘোষণার আশা করেছিল। তবে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্মেলনের প্রথম দিনেই ঘোষণা করেন, জোটটি ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
যৌথ ঘোষণার একটি খসড়া শুক্রবারই বিবিসির হাতে এসেছে। ওই খসড়ায় ইউক্রেন ইস্যুর অনুচ্ছেদটি খালি ছিল। তবে, জোটটির বালিতে হওয়া সর্বশেষ সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধের পয়েন্টটি খুব অগ্রাধিকার পায়।
ধারণা করা হচ্ছে, দিল্লিতে হওয়া সম্মেলনে যৌথ ঘোষণাটি পশ্চিমা দেশগুলো ও রাশিয়া উভয়কে ইতিবাচক দিক পেতে ডিজাইন করে করা হয়েছে। তবে, প্রক্রিয়াটিতে এমন ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে যা গত বছরের বালিতে হওয়া সম্মেলনে মস্কোর নিন্দার তুলনায় শক্তিশালী নয়।
বালিতে জোটটির সদস্যরা ঘোষণায় মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর ভাষা ব্যবহার করেছিল। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলা আগ্রাসনের রাশিয়ান ফেডারেশনের তীব্র সমালোচনাও করেছিল। তবে, এবারের সম্মেলনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো হয়নি।
এবারের সম্মেলনে মানুষের কষ্ট ও ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বৈশ্বিক খাদ্য এবং জ্বালানিতে যে সংকট তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি ভিন্ন মতামত ও মূল্যায়নের স্বীকৃতির পুনরাবৃত্তি করেছে।
ঘোষণায় ‘দ্য ওয়ার এগানস্ট ইউক্রেন (ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ) এর পরিবর্তে ‘দ্য ওয়ার ইন ইউক্রেন’ (ইউক্রেন যুদ্ধ) বলা হয়েছে। এর ফলে রাশিয়ার বিভিন্ন ঘোষণাকে অনুমোদনের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে।
গত বছর বালিতে হওয়া জি-২০ সম্মেলনে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এবার তেমনটি করা হয়নি। আর এতেই ঘোষণায় পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটরা) এক পোস্টে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়টি পরিবর্তন করে জি-২০ জোটের কোনো লাভ হবে না। এ নিয়ে তারা গর্ব করতে পারে না।’
এদিকে, ভারতে হওয়া জোটটির সম্মেলনে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়টি হলো, আফ্রিকান ইউনিয়নকে (এইউ) জোটের পূর্ণ সদস্যের জন্য মোদির আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ। আর এতে সায়ও দিয়েছে এইউ। দিল্লির ভাষ্য অনুযায়ী, এই আমন্ত্রণ এশিয়া ও আফ্রিকায় চীনের আধিপত্য কমাবে।