৫৯ শতাংশ বাংলাদেশির পছন্দ গণতান্ত্রিক সরকার : মার্কিন সংস্থার জরিপ
বাংলাদেশের মানুষের পছন্দ গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকার। দেশের ৫৯ শতাংশ মানুষের বিশ্বাস অন্য যে কোনো পদ্ধতির চেয়ে গণতান্ত্রিকভাবে গঠিত সরকার বেশি ভালো। এ ছাড়া ৯১ শতাংশ বাংলাদেশি গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত একটি দেশে বাস করতে ইচ্ছুক। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন নামের একটি অলাভজনক সংস্থার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। মার্কিন সংস্থাটি ‘ওপেন সোসাইটি ব্যারোমিটার: ক্যান ডেমোক্রেসি ডেলিভার?’ শীর্ষক জরিপটি চলতি মাসে অর্থাৎ, সেপ্টেম্বরেই প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশসহ আরও ৩০টি দেশে জরিপ চালিয়েছে সংস্থাটি। প্রতিটি দেশের এক হাজার মানুষ জরিপে অংশ নেন। প্রতিবেদনে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, সরকার নির্ধারণে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পছন্দ বিশ্বের ৮৬ শতাংশ মানুষের। এমনকি, বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ (৬২ শতাংশ) গণতান্ত্রিক দেশে বাস করতে ইচ্ছুক।
জরিপে অংশ নেওয়াদের জিজ্ঞাসা করা হয়, তারা কি গণতান্ত্রিকভাবে সরকার গঠিত এমন দেশে বাস করতে চাই? জবাবে জরিপে অংশ নেওয়া ৯১ শতাংশ বাংলাদেশি জানিয়েছে, তারা গণতান্ত্রিকভাবে গঠিত সরকারের অধীনে থাকতে চায়।
সরকার গঠন পদ্ধতিতে গণতন্ত্র সুখকর, নাকি অন্য কোনো পদ্ধতি উত্তম, এমন প্রশ্নের জবাবে জরিপে অংশ নেওয়া ৫৯ শতাংশ বাংলাদেশি গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার গঠনের পক্ষে ভোট দেন।
এদিকে, জরিপে অংশ নেওয়া ২০ শতাংশ মানুষ মনে করেন, একনায়কতন্ত্র দেশগুলোর শাসকেরা জনগণের চাহিদা পূরণে অন্য যেকোনো পদ্ধতির সরকারের চেয়ে বেশি সক্ষম। জরিপে অংশ নেওয়া ১৬ শতাংশ মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে গণতান্ত্রিক সরকারের চেয়ে একনায়কতন্ত্র সরকার বেশি কার্যকর। তবে, এর উল্টোটা মনে করেন ৮৪ শতাংশ।
জরিপে অংশ নেওয়া ২১ শতাংশ মনে করেন, একনায়কতন্ত্র সরকার যুদ্ধে বিজয় পাবেন। তবে, এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে জরিপে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশ। রাস্তা ও সেতু নির্মাণে একনায়কতান্ত্রিক সরকার বেশি কার্যকর বলে মনে করেন জরিপে অংশ নেওয়া ২১ শতাংশ। তবে, এর বিপক্ষে রয়েছে ৭৯ শতাংশ। নতুন করে চাকরি সৃষ্টিতে একনায়কতান্ত্রিক সরকার কার্যকর বলে মনে করেন জরিপে অংশ নেওয়া ২৭ শতাংশ। তবে, ৭৩ শতাংশের ভাবনা উল্টো। এ ছাড়া, জরিপে অংশ নেওয়া ৩৬ শতাংশ মনে করেন একনায়কতন্ত্র সরকার অপরাধ দমনে কার্যকর। আর ৬৪ শতাংশ মনে অপরাধ রোধে গণতান্ত্রিক সরকার বেশি কার্যকর।
এদিকে, বিশ্বের উপকারে মানবাধিকার কতটা কার্যকর এমন প্রশ্নের জবাবে পক্ষে ভোট দিয়েছে ৭২ শতাংশ জরিপে অংশগ্রহণকারী। তবে, জাপানে এই জবাবে পক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ৪৫ শতাংশ। পক্ষে ভোট দিয়েছে ৮৮ শতাংশ বাংলাদেশিও।
জরিপে অংশ নেওয়াদের মূল্যবোধকে মানবাধিকার প্রতিফলিত করে কি না এমন প্রশ্নে ৮২ শতাংশ বাংলাদেশি পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কোন অধিকার আপনার কাছে বেশি জরুরি? জবাবে ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের কথা জানিয়েছেন। ২৮ শতাংশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার, ১৭ শতাংশ পরিবেশগত অধিকার এবং ১৩ শতাংশ ডিজিটাল অধিকারের কথা জানিয়েছেন।