ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও তলানিতে
যত দিন যাচ্ছে, ততই ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে। ভারত জানিয়েছে, কানাডাকে তাদের দূতাবাস থেকে কর্মী কমাতে হবে। কারণ, কানাডায় ভারতের দূতাবাসে যত কর্মী আছে, তার থেকে অনেক বেশি কর্মী দিল্লিতে কানাডার দূতাবাসে আছে।
শুধু তাই নয়, ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, কানাডা এখনও পর্যন্ত খালিস্তানপন্থি শিখ নেতা নিজ্জারের হত্যা নিয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ দেয়নি। শুধু অভিযোগ করেছে। তারা নির্দিষ্ট তথ্য চায়। ভারত এটাও জানিয়ে দিয়েছে, কানাডায় দূতাবাসকর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। এই অবস্থায় সেখানে ভিসা দেওয়ার কাজ করা হবে না।
সংবাদ সংস্থা এপিকে কানাডার এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি করা হয়েছিল। তারপরই ট্রুডো নিজ্জার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ওই অভিযোগ করেছেন।
কানাডা ফাইভ আই ইনটেলিজেন্স শেয়ারিং সিস্টেমের সদস্য। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও কানাডা গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে। সেখান থেকেই ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কূটনীতিকদের বার্তা বিনিময়ের তথ্য কানাডা পেয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বৈঠকের সাইডলাইনে ট্রুডো বলেন, ‘কানাডা ভারতের সঙ্গে সমস্যা তৈরি করতে চায় না। তারা ভারতকে উসকানি দিতেও চায় না। তারা চায়, সত্য জানার জন্য কানাডা ও ভারত একসঙ্গে কাজ করুক। ভারত যেন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়, পুরো স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমন একটা দেশ, যেখানে আইনের শাসন চালু আছে। আমরা কানাডার নাগরিকদের নিরাপদে রাখতে চাই।’
এদিকে, কানাডা-ভরত দ্বন্দ্বে অটোয়াকে সমর্থন দিচ্ছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভান বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন, তাতে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত। আমরাও জানতে চাই, কী হয়েছিল। কানাডার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখেছি। পরামর্শও দিচ্ছি। কানাডার তদন্তকে আমরা সমর্থন করি।’
বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘কানাডা অভিযোগ করেছে, কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে, এই অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা মনে করি, তাদের অভিযোগ পক্ষপাতপূর্ণ।’
অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘অভিযোগ করার আগে বা পরে কানাডা কোনো তথ্য প্রমাণ ভারতকে দেয়নি। আমরা বলেছি, কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পেলে দেখব। এখনও কিছু পাইনি। আমাদের পক্ষ থেকে কানাডাকে কিছু ব্যক্তির ভারতবিরোধী কাজের নির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছি। কিন্তু, তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
অরিন্দম বাগচি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে এই বিষয়সহ নানান বিষয়ে কথা বলেছি ও বলছি। আমরা আমাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছি।’
কংগ্রেসের সংসদ সদস্য শশী থারুর বলেন, ‘কানাডা এ রকম একটা গুরুতর অভিযোগ করছে, কিন্তু কোনো প্রমাণ দিচ্ছে না, এটা আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। ওখানে ভারতবিরোধী, হিন্দুবিরোধী পোস্টার লাগানো হয়েছে। ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে। কিন্তু, সেখানকার কর্তৃপক্ষ কিছুই করেনি।’