ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করল সৌদি আরব
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিয়ে আলোচনা স্থগিত করেছে সৌদি আরব। একটি সূত্র আজ শনিবার (১৪ অক্টোবর) ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সংঘাতের মধ্যেই সৌদি থেকে এ সিদ্ধান্ত এলো।
এএফপি জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে বৃহৎ আকারে হামলা চালায় হামাস। এতে এ পর্যন্ত এক হাজার ৩০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। হামলার জেরে গাজা উপত্যকায় একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে উপত্যকাটিতে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। গাজায় স্থলপথে অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।
সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক সম্ভাব্য স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়ায় জড়িত এক সূত্র এএফপিকে বলেন, ‘আলোচনাটি স্থগিত করেছে সৌদি আরব। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছে তারা।’
বর্তমানে সৌদিতে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। আজ সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ঠিক এর আগেই আলোচনা স্থগিত করার খবরটি সামনে এলো।
এএফপি বলছে, মুসলমান ধর্মালম্ভীদের তীর্থ ভূমি সোদি আরব এখন পর্যন্ত ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় বাহারাইন, আর আমিরাত ও মরোক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। তবে, ওই সময়ও যুক্তরাষ্ট্রের কথায় সায় দেয়নি সৌদি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য সৌদি আরবের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য ওয়াশিংটনকে বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে রিয়াদ, যা হয়েছে সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মাধ্যমে। ওয়াশিংটনের কাছে নিরাপত্তা গ্যারান্টি ও বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নয়নে সহায়তা চায় রিয়াদ।
গত মাসে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছিলেন, ‘প্রতিদিন আমরা একটি চুক্তির কাছাকাছি যাচ্ছি।’ যদিও সাক্ষাৎকারে তিনি ফিলিস্তিন ইস্যুটি নিয়ে জোর দিয়েছিলেন। সালমান বলেছিলেন, ‘ফিলিস্তিন ইস্যু আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এর সামাধান চাই। ফিলিস্তিনিদের জীবন সহজ করতে হবে।’
ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধের আগে সৌদি আরবের সঙ্গে ইহুদি দেশটির সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়টি একটি ‘লং শর্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছিল বিশ্লেষকরা। সৌদির বিশ্লেষক হাশেম আলঘানাম বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ যুক্তরাষ্ট্রের একটি উদ্যোগ। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের বিরোধ সমাধান হলে সৌদি একে স্বাগত জানাবে। তবে, বাস্তবে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য সত্যিই প্রস্তুত ছিল না।’