গাজায় হাসপাতালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ৫০০
গাজায় একটি হাসপাতালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৫০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দিনগত রাতের এই হামলার দায় কোনো পক্ষই স্বীকার করেনি। ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা এই আক্রমণ করেনি। ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীদের রকেট ভেঙে হাসপাতালে পড়েছে। আর হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়েছে। তার ফলে এই ভয়ঙ্কর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
হাসপাতাল আক্রান্ত হওয়ার পর আরব দেশগুলো জানিয়েছে, তারা জর্ডানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আর আলোচনায় বসবেন না।
গাজার সিভিল ডিফেন্স প্রধান প্রথমে বলেছিলেন, হাসপাতালটিতে হামলায় অন্তত ৩০০ জন মারা গেছেন। পরে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা গেছেন। উদ্ধারকারীরা এখনও কাজ করে যাচ্ছেন।
ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক বিবিসিকে বলেন, সেখানে চার হাজার ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখন ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস বলেন, ‘গাজার হাসপাতালে কয়েক শ ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষের মৃত্যুতে আমি বিপর্যস্ত। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। হাসপাতাল ও এর কর্মীরা আন্তর্জাতিক আইনে সুরক্ষিত।’
গাজায় টানা কয়েকদিনের ইসরায়েলি হামলায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অন্যদিকে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণে এক হাজার ৩০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া ২০০ জনকে জিম্মি করেছে তারা।
এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও রাশিয়ার অনুরোধে আজ বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। বরেল বলেন, ‘আবার বেসামরিক মানুষকে চরম মূল্য দিতে হলো। এ ঘটনার জন্য কারা দায়ী, তা জানতে হবে এবং তাদের শাস্তি দিতে হবে।’
মাক্রোঁ বলেন, ‘এই হামলার পেছনে কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। ফ্রান্স এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা করছে।’ ফ্রান্সের দাবি, অবিলম্বে গাজায় মানবিক সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘হাসপাতালে বিস্ফোরণের ফলে আমি ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত।’
জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘ইসরায়েলে পৌঁছানোর পর বাইডেন প্রথমে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। তারপর তিনি ইসরায়েলের ওয়ার ক্যাবিনেটের সঙ্গে মিলিত হবেন। যারা হামাসের আক্রমণের সফল মোকাবিলা করেছিলেন, এমন কিছু মানুষের সঙ্গে বাইডেন দেখা করবেন।’
কিরবি বলেন, ‘তারপর হামাসের আক্রমণে যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন এমন কিছু পরিবারের সঙ্গে বাইডেন দেখা করবেন। ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। এ ছাড়া ইসরায়েলের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে বাইডেন কিছু কঠিন প্রশ্ন তুলে ধরবেন।’