গাজা ‘নরকে’ পরিণত, দ্রুত মানবিক সহায়তা প্রয়োজন
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মকর্তা জুলিয়েট টোমা অবরুদ্ধ গাজা শহরের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, গত দুটি সপ্তাহে গাজা মূলত ‘নরকের গহ্বরে’ পরিণত হয়েছে। গাজার ওপর যে অবরোধ চলছে, তা খুব দ্রুত তুলে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা, সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের এই মুহূর্তে মানবিক সহায়তা সবচেয়ে বেশি দরকার।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মকর্তা জুলিয়েট টোমা এসব কথা বলেন।
জুলিয়েট বলেন, ‘সময় ফুরিয়ে আসছে। দুই সপ্তাহ চলে গেছে। গত দুটি দীর্ঘ সপ্তাহজুড়ে ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় কোনো ধরনের সাহায্য সামগ্রী সরবরাহ করতে পারেনি।’
জুলিয়েট আরও বলেন, ‘ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে সময়, তবে আমরা জানি না কখন রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়া হবে।’
এদিকে, জাতিসংঘ ও সাহায্য সংস্থাগুলো গাজার সঙ্গে সংযুক্ত মিসরের সীমান্তে অপেক্ষা করছে। তাদের আশা, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যদি আবারও সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য সাহায্যের চালান উপত্যকাটিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যে গত সপ্তাহের চুক্তি অনুসারে ২০টি ট্রাক এই সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবে। তবে জাতিসংঘের মতে, সেখানে আরও অনেক বেশি মানবিক সহায়তা সামগ্রী প্রয়োজন।
স্যাটেলাইটের ইমেজ থেকে দেখা গেছে, মিসরের রাফাহ সীমান্তে ৫০টিরও বেশি লরি ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে অপেক্ষা করছে।
অন্যদিকে এ সপ্তাহের শুরুতে গাজায় সীমিত পরিমাণে সাহায্য সামগ্রী পাঠাতে চুক্তিতে পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, শুক্রবারের আগে গাজায় সাহায্য পাঠানো যাবে না। কারণ, সাহায্য পাঠাতে হলে রাফাহ ক্রসিংয়ের রাস্তায় তৈরি হওয়া বড় বড় গর্তগুলো আগে মেরামত করতে হবে।
বাইডেন আরও বলেন, ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসকে এড়িয়ে কীভাবে সাহায্য সামগ্রী বহনকারী ট্রাকের বহর সেখানে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। তবে আজ কখন রাফাহ ক্রসিং চালু হবে, সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি।
এদিকে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবিরাম বিমান হামলায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ফলে মানবিক সংকট গুরুতর আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। বিভিন্ন স্কুল ও শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এসব শরণার্থী পানি ছাড়াও চরম খাদ্য সংকটের মুখে রয়েছে, পাশাপাশি দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব।
অন্যদিকে, গাজা থেকে গত রাতেও ইসরায়েলে বেশ কিছু রকেট ছোড়া হয়। তবে এতে হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তেও ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবানন ভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হেজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।