ঝড়ে রাশিয়ায় বিদ্যুৎহীন ১৯ লাখ মানুষ
ঝড়ের সঙ্গে তীব্র বাতাস ও বন্যায় রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ১৯ লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। তবে, দেশটির তাদের দক্ষিণাঞ্চলের যে কথা বলেছে সেখানে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডও রয়েছে। ইউক্রেনের ওই অঞ্চলগুলো জোরপূর্বক দখল করেছে মস্কো। খবর বিবিসিরি।
রাশিয়ার জ্বালানিমন্ত্রী বলেছেন, ‘ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে দেগাস্তান, ক্রাসোন্দর, রোস্তভ, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া ও ক্রিমিয়া অঞ্চল। ওইসব অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।’ এর মধ্যে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া ও ক্রিমিয়া এক সময় ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ছিল।
রাশিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ঝড়ের কারণে অন্তত চারজন মারা গেছে।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তুষার ঝড়ের কারণে তাদের দুই হাজার ১৯টি গ্রাম বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। একই ঝড় আঘাত হেনেছে মালদোভা, জর্জিয়া ও বুলগেরিয়ায়।
বিবিসি বলছে, ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বাতাসের কারণে রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর বন্দরে বড় বড় ঢেউ দেখা যায়। শহরের সমুদ্রসীমায় আছড়ে পড়ে ঢেউ। এ ছাড়া ঢেউয়ের আঘাতে তিন তলা একটি ভবন ধসে পড়েছে। আনাপা শহরের কাছে, কৃষ্ণ সাগরের রাশিয়ার উপকূলে ২১ জন ক্রুসহ একটি পণ্যবাহী জাহাজ তলিয়ে গেছে।
এদিকে, তুষার ঝড় আঘাত হেনেছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতেও। ভারী তুষারপাতের পর রাস্তা পরিষ্কার করতে বিশেষ যন্ত্রপাতি নামাতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের উপকূলীয় এলাকায় বন্যা হয়েছে। তীব্র বাতাসে দ্বীপটির রাস্তায় গাছপালা ভেঙে পড়েছে। ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপল বন্দরে বন্যায় সেখানকার একটি ঐতিহাসিক জাদুঘর-অ্যাকোরিয়াম ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ৮০০ বিদেশি মাছ মারা গেছে। এ ছাড়া ক্রিমিয়ার বেশ কয়েকটি এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আন্টন হেরাশচেঙ্কো বলেন, ‘ঝড়ে ক্রিমিয়ার সৈকতে রুশ সেনাবাহিনীর তৈরি করা খাল ভেসে গেছে।’ তবে, এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি রুশ কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ ডিএসএনএস বলছে, তুষার ঝড় ও তীব্র বাতাসে দেশটির ১৬টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু জায়গায় তুষারপাত দুই মিটারের বেশি হওয়ায় ৮৪০টির মতো যানবাহনকে সরিয়ে নিতে হয়েছে। রাস্তায় আটকে পড়েছে অন্তত এক হাজার ৩৭০টি পণ্যবাহী লরি। সংস্থাটি জানিয়েছে, ওডেসায় গাড়িতে আটকা পড়া ৪৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছে।