দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে গাজার অধিবাসীরা : জাতিসংঘ
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার প্রতিটি মানুষ আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে উচ্চমাত্রার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য বলা হয়েছে।
গাজায় পঞ্চম স্কেলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা করে জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা আইপিসি বলেছে, ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গাজা উপত্যকার সমগ্র জনসংখ্যা, অর্থাৎ প্রায় ২২ লাখ মানুষ সংকটের আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছাবেন। এটি উচ্চস্তরের তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন লোকদের সর্বোচ্চ সংখ্যা, যা আইপিসি কোনো অঞ্চল বা দেশের জন্য শ্রেণিবদ্ধ করেছে।
প্রতিদিনের বোমাবর্ষণ, খাদ্য ও পানির ঘাটতি এবং ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি সহ্য করা গাজাবাসীর দুর্দশার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সতর্কতা বেড়েছে। ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) ক্ষুধার মাত্রা এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত নির্ধারণ করে থাকে।
আইপিসির প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, গাজায় ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ ‘জরুরি’ পর্যায়ে থাকবেন, যাদের খুব উচ্চমাত্রার তীব্র অপুষ্টি ও অতিরিক্ত মৃত্যুহারের মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে।
সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, চারটি পরিবারের মধ্যে অন্তত একটি, পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষকে পঞ্চম স্তরের বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা কেয়ার বলেছে, পরিসংখ্যানগুলো ‘উদ্বেগজনক’ এবং জার্মানি বলেছে, এটি ‘ভয়াবহ’।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স পোস্টে বলা হয়, ‘ইসরায়েল আরও ভালো মানবিক সহায়তা পাঠানোর পথ পরিষ্কার করা এবং তাদের সামরিক কৌশলকে মানিয়ে নিয়ে মানবিক যুদ্ধবিরতির অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবতে পারে। কারণ, ক্ষুধা সন্ত্রাসকে লালন করে।’
ইসরায়েলি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে এবং প্রায় এক হাজার ১৪০ জনকে হত্যা করে। এদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক ছিল এবং ২৫০ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। এরপর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল বিরামহীন বিমান ও স্থল অভিযান চালিয়েছে। এতে ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে আট হাজার শিশু এবং ছয় হাজার ২০০ জনের বেশি নারী রয়েছেন।